মলয় দে, নদীয়া :-“বাংলার মোসলিন বাগদাদ রোমচীন কাঞ্চন তৈলেই কিন্তু একদিন” বাংলার তাঁতকাপড়ের প্রতি, বিশ্ববাসীর আগ্রহ দেখে কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত এ কথা লিখে গিয়েছিলেন বহু আগেই। বয়ন শিল্পের জন্য পশ্চিমবঙ্গের ধোনেখালি, শান্তিপুরি ,সমুদ্রগড়, চন্দননগরের নাম আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত। জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর চরকায় সুতো কাটার ইতিহাস অবিস্মরণীয় চিরন্তন।
মূলত ১৭২০ সালে হুগলির চন্দননগরে বিশ্ব বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করতো যথেষ্ট সুনাম এর সালে। তবে ১৭৩০ সালে ডুপ্লে আসার পর যন্ত্রের প্রচলন হয় বলে কথিত আছে। রেশমের গুটি গরম জলে সেদ্ধ করে তা থেকে তাসুন প্রক্রিয়ায় সুতো উৎপাদন বা শিমুল গাছের ফল থেকে সুতো উৎপাদন, কাপাস চাষ থেকে সূতা প্রাপ্তি ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সহায়ক হয়েছে বিভিন্ন আধুনিক উন্নত মানের যন্ত্র আবিষ্কারের ফলে।
এই সূত্র থেকে, অম্ল বা এসিড ডাই ক্ষার জাতীয় বা বেশি ডাই, ন্যাপথল, সিমেন্ট রং, ভ্যাট রং, ভেজিটেবল ডাই, ডেভলপ ডাই নানান পদ্ধতিতে, সুতো রং এর ব্যবস্থা প্রচলিত। তবে বেনীআসহকলা এই সাত রং কিন্তু সুতোর ক্ষেত্রে সাতাশটি রঙে বিভক্ত। তবে আধুনিক উন্নত ব্যবস্থায় বিভিন্ন মিশ্রনরং ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। এরমধ্যে কালো রাজা, এ ধরনের নানান পাকা রং করতে গরম জলে ফুঁটিয়ে রং করার প্রচলন আছে, আবার বেশকিছু হালকা রং ঠান্ডা জলেই করা যায়। তবে রংয়ের গাঢ়ত্ব নিয়ন্ত্রণ করতে একবারের জায়গায় দুবার তিনবার পর্যন্ত রং জলে ভিজিয়ে তা শুকিয়ে নির্ধারণ করা হয়। তবে কোরা সুতো থেকে, ব্লিচিং পাউডার এবং অ্যাসিড দিয়ে প্রথমে সাদা করে নেওয়া হয়, তারপর বিভিন্ন রং ব্যবহার করা হয়। তবে কিছু রং সরাসরি কোরা রং থেকেই করা যায়।
দীর্ঘ লকডাউনে কলকাতার বিভিন্ন গদিঘর থেকে সুতো নিয়ে এসে রং করার ব্যবস্থা ব্যাঘাত ঘটে ফলে সেই ঘাটতি পূরণের জন্য এখন যথেষ্ট চাপে রয়েছেন সুতরং কর্মীরা।