নদীয়ার রাসে ৫১ কেজি ক্ষীর দিয়ে তেরো ফুট উচ্চতার কালী মূর্তি

Social

মলয় দে নদীয়া :-সব ক্ষেত্রে প্রতিমার বিচুরলির কাঠামোর উপরে কাদামাটির প্রলেপ দেওয়া হলেও নদীয়া শান্তিপুরে দেওয়া হচ্ছে ক্ষীর, তাই দেখতে কচিকাঁচারা ভিড় জমিয়েছে। বড় মাপের প্লাস্টিক ঢাকা দিয়ে তবেই তৈরি করা হচ্ছে প্রতিমা।

পাঁচ কেজি দুধ দীর্ঘক্ষণ জ্বাল দিয়ে পাওয়া যায় এক কেজি ক্ষীর। আর সেরকমই ৫১ কেজি ক্ষীর দিয়ে তৈরি হচ্ছে ১৩ ফুট উচ্চতার কালী মায়ের প্রতিমা, মুন্ডুমালা ,মুকুট, এর নানান অলংকারহ খর্গ, শিয়াল এমনকি ভোলা মহেশ্বরও ক্ষীরের তৈরি।

নদীয়ার শান্তিপুরের রাস উৎসবে ৫১ তম বর্ষে তিলিপাড়া ত্রিমাথা রাস কালী আরাধনা একান্ন কেজি ক্ষীর দিয়ে ১৩ ফুট উচ্চতার কালী প্রতিমা এবার চমক পেতে চলেছে। মায়ের পায়ের নিচে রয়েছে শিবের শব মূর্তি, সঙ্গে একটি শৃগাল। সবটাই ক্ষীরের তৈরি। ৫ কেজি দুধ জাল দিয়ে তবে এক কেজি ক্ষীর মেলে। মুর্শিদাবাদের শিল্পী গোপাল কর্মকার, তিনি মূলত মৃৎশিল্পীই বটে, অন্যান্যবারের মতো এবারও নতুন একটা চমক দিতে দর্শক টানার উদ্দেশ্যে তৈরি করেছেন নতুন উপকরণ, ক্ষীর দিয়ে তৈরি কালীপ্রতিমা। তবে ক্ষীরের তৈরি প্রতিমার আকর্ষণ কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রচার হয়ে গিয়ে মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে আকর্ষণ।

মুর্শিদাবাদদের ওই শিল্পী জানিয়েছেন, বাঁশের তৈরির কাঠামোয় মাটির সঙ্গে বিচালি মিশিয়ে মূর্তির কিছুটা অবয়ব তৈরি করার পর এরপর তার ওপরে লাগানো হয় ক্ষীরের প্রলেপ।’ তিনি জানিয়েছেন,’ মাটির সঙ্গে বিচালি মিশিয়ে কাঠের পরিকাঠামোর ওপর ক্ষীরের প্রলেপ লাগাতে গিয়ে কিছুটা আঠালো ভাব পাওয়া যায়। মাটি দিয়ে করতে গেলে এর থেকে অনেক বেশি অসুবিধা হয়। তবে দুধে জাল দেওয়ার পরে তৈরি করা ক্ষীর দিয়ে এই ধরনের প্রতিমা তৈরি করতে গেলে অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। তবু দর্শনার্থীদের কাছে নতুন রকম ভাবনা তুলে ধরার জন্য এই ধরনের চিন্তাভাবনা উদ্যোগ নিয়েছে এই পুজো কর্তৃপক্ষ। আমি বহুদিন ধরে এই পুজো কমিটির প্রতিমা তৈরি করে আসছি নতুন নতুন ভাবনা দিয়ে। এবার তৈরি করছি ক্ষীরের প্রতিমা ।আশা করি, দর্শকদের কাছে সেটা খুবই মনোরঞ্জনকর হবে।’ প্রতিমা তৈরি করার জন্য কত খরচ,তিনি অবশ্যই জানাননি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য পাওয়া যায়নি ওই পুজো কমিটির কোন কাউকে। তবে এবারের এই পুজো কমিটির ক্ষীরের প্রতিমা যে মানুষের কাছে বিশেষ দর্শনীয় হয়ে উঠবে রাসপুজোতে, তা বলাই বাহুল্য। যদিও ক্ষীরের প্রতি মানুষের যে আকর্ষণ রয়েছে, সেই আকর্ষণ মেটানোর জন্য প্রতিমার পাশেই রাখা হচ্ছে কিছুটা ক্ষীরের ব্যবস্থা। প্রতিমা দেখতে আসা শিশু, কিশোর আর কিশোরীরা যাতে লোভ সামলাতে না পারে, সেই কারণে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে কিছুটা ক্ষীর। তবে প্রতিমাকে নিয়মমাফিক এবং প্রথামত যথারীতি দেওয়া হবে বিসর্জন।

Leave a Reply