পশ্চিমবঙ্গ সমবায় কর্মচারী সমিতি হাওড়া জেলা কমিটির ২য় বার্ষিকী জেলা সম্মেলন ‌ ‌

Social

অভিজিৎ হাজরা, উদয়নারায়ণপুর, হাওড়া :- ‌ পশ্চিমবঙ্গ সমবায় কর্মচারী সমিতি হাওড়া জেলা কমিটি – র ২ য় বার্ষিকী জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল গ্ৰামীণ হাওড়া জেলার উদয়নারায়ণপুরে রায়বাঘিনী রাণী ভবশঙ্করী স্মৃতি বিজড়িত রায়বাঘিনী রাণী ভবশঙ্করী পর্যটন কেন্দ্র – র অডিটোরিয়াম হল এ।

শুরুতেই একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা উদয়নারায়ণপুর পর্যটন কেন্দ্র থেকে শুরু হয়ে ঐ শোভাযাত্রা উদয়নারায়ণপুরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে পুনরায় ফিরে আসে পর্যটন কেন্দ্রে। অডিটোরিয়ামের মূল প্রবেশ পথের পাশে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন হাওড়া জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক লিমিটেড এর প্রাক্তন সভাপতি তথা উদয়নারায়ণপুর কেন্দ্রের বিধায়ক সমীর কুমার পাঁজা, সমবায় সমিতির পতাকা উত্তোলন করেন পশ্চিমবঙ্গ সমবায় কর্মচারী সমিতি হাওড়া জেলা কমিটির সভাপতি প্রতাপ কুমার পাঁজা।রায়বাঘিনী রাণী ভবশঙ্করী পর্যটন কেন্দ্র অডিটোরিয়াম হল এ মাঙ্গলিক প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উদয়নারায়ণপুর কেন্দ্রের বিধায়ক সমীর কুমার পাঁজা।

উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সমবায় কর্মচারী সমিতি – র রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমল বেরা, সাংগঠনিক সম্পাদক মন্টু কুমার মন্ডল, হুগলি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অচিন্ত্য কুমার মন্ডল, হাওড়া জেলা কমিটির সভাপতি প্রতাপ কুমার পাঁজা, সম্পাদক দেবব্রত কর্মকার। ‌ সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ সমবায় কর্মচারীরা আজ বঞ্চিত, সেটা বিভিন্ন বক্তারা তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন, বিগত বামফ্রন্ট সরকার সমবায় কর্মচারীদের সুযোগ – সুবিধা প্রদান,অসুবিধা দূরীকরণে সম্পুর্ন উদাসীন ছিল। বতর্মান রাজ্য সরকার ও উদাসীন। পশ্চিমবঙ্গ সমবায় কর্মচারী সমিতি হাওড়া জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সমবায় কর্মচারীরা যে আজ ও নানান সমস্যার মধ্যে আছে, কর্মচারীরা যে বঞ্চিত তা ব্যাক্ষা করে, বর্তমান সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দাবি সনদ উদয়নারায়ণপুর কেন্দ্রের বিধায়ক সমীর কুমার পাঁজা- র হাতে প্রদান করেন। এই সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ সমবায় কর্মচারী সমিতি – র হাওড়া জেলা কমিটি – র মুখপত্র ” হাওড়া চলন্তিকা ” – ১ ম সংখ্যার প্রচ্ছদ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উদয়নারায়ণপুর কেন্দ্রের বিধায়ক সমীর কুমার পাঁজা। ‌ এই সম্মেলনে হাওড়া জেলার সমবায় সমিতি গুলি থেকে ৪০০ জনের অধিক কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সমবায় কর্মচারী সমিতি হাওড়া জেলা সম্পাদক দেবব্রত কর্মকার বলেন, ” হাওড়া জেলার সকল সমবায় কর্মচারীদের সুযোগ – সুবিধা, দাবি – দাওয়া আদায়ের জন্য একটি ছাতার প্রয়োজন ছিল। আমরা সেই ছাতার সন্ধান পাই ২০ /০৮/২০২৩ সালে।ঐ সালেই আমরা পশ্চিমবঙ্গ সমবায় কর্মচারী সমিতি – র সদস্যপদ গ্ৰহণ করি। আমাদের হাওড়া জেলায় ১৪ টি ব্লক ।ঐ ব্লক গুলির মধ্যে ১১ টি ব্লক সংগঠিত ব্লক।বাকি তিনটি ব্লক শহর কেন্দ্রিক হওয়ায় কৃষি সমবায় সমিতির সংখ্যা খুবই কম। হাতে গোনা কয়েকটি সমিতি থাকলেও তাঁদের কাছে আমরা এখন ও পৌঁছাতে পারি নি। বতর্মানে আমাদের জেলায় সংগঠনের সভ্য সংখ্যা ৩৬১ জন। আমরা জেলা সংগঠনের মাধ্যমে জেলার সহ নিবন্ধক কাছে এবং জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক এর কাছে সমবায় সমিতি ও আমাদের কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে ডেপুটেশন প্রদান করি।১৩/১২/২০২৩ তারিখে এ,আর,সি,এস হাওড়া রেঞ্জ এর কাছে পে – স্কেল ও অন্যান্য সমস্যা নিয়ে ২৫/০৬/২০২৪ তারিখে সি,ই,ও হাওড়া ডি,সি,সি,বি লিঃ এর আধিকারিকে ক্রেডিট লিমিট ও সি,এস, পি সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে এবং পুনরায় ১১/০৯/২০২৪ তারিখে এ, আর,সি, এস হাওড়া রেঞ্জ আধিকারিক এর নিকট সমবায় ও কর্মচারীদের নিরাপত্তা বিষয়ে এবং ২১/০২/২০২৫ তারিখে ডি,ডি,এ (এ্যাডমিন) হাওড়া আধিকারিক এর কাছে সার সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে ডেপুটেশন প্রদান করেছি। তবে আমরা যে,সব দাবি গুলো আমরা সমাধান করতে সক্ষম হয়েছি,তা দাবি করতে পারবো না। কিন্তু অনেকাংশে সফলতা আমরা পেয়েছি। আমাদের সংগঠনের আন্দোলনের চাপে ব্যাঙ্ক এন,ই,এফ,টি/ আর,টি,জি,এস চার্জ নেওয়ার নির্দেশিকা তুলে নিয়েছেন। সমিতির বি,ও,ডি নির্বাচন এবং এডহক গ্ৰান্ট পেমেন্ট ত্বরান্বিত হয়েছে। জেলা সমবায় সহ নিবন্ধক ও জেলা মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক এর সঙ্গে আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে একটা সু সম্পর্ক স্থাপন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। আমাদের সংগঠন দুর্নীতির সঙ্গে আপোষ করে না এবং ভবিষ্যতেও করবে না। আমাদের আগামী দিনের লক্ষ্য জেলার সকল সমিতিতে নির্বাচিত পরিচালক মন্ডলী গঠন করা, জেলার যে সকল সমিতির কর্মচারীদের পে – স্কেল অনুযায়ী মাহিনা প্রদান করা হয় না, সেখানে পে – স্কেল চালু করা, জেলার সকল সমিতির কর্মচারীদের আইডেন্টিটি কার্ড তৈরীতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্ৰহণ করা, আমাদের সংগঠনের নিজস্ব অফিস গৃহ নির্মাণ করা, জেলার অন্তর্গত যে সকল সমিতিতে ৩১/০৩/২০২৫ পর্যন্ত নিরিক্ষা কাজ সম্পূর্ণ করা যায় নি সেই সমিতি গুলির নিরীক্ষা কাজ সম্পন্ন করতে উদ্যোগ গ্ৰহণ। করা, জেলার যে সকল সমিতির নিজস্ব অফিস গৃহ নেই, সেই সকল সমিতি যাহাতে সরকারী অনুদানের মাধ্যমে অফিস গৃহ নির্মাণ করতে পারে,তাহার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্ৰহণ করা, জেলার অন্তর্গত যে সকল সমিতি বন্ধ হয়ে গেছে, আমানতকারীরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না, সেই সকল সমিতির আমানতকারীগণ যাহাতে তাঁহাদের জমানো টাকা ফেরত পাইতে পারেন, তাঁর জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্ৰহণ করা। জেলার অন্তর্গত যে সকল সমিতির অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে সেখানে এন,পি,এ কমানোর বিষয়ে উদ্যোগ গ্ৰহণ করা।

Leave a Reply