দেশপ্রেম, জাতীয় চেতনা এবং নাগরিকত্ববোধ তৈরি করার লক্ষ্যে নদীয়ার কলেজে ব্রতচারী

Social

মলয় দে নদীয়া:- অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করল নদিয়া জেলার আসাননগর মদনমোহন তর্কালঙ্কার কলেজ। শুরু করলো ব্রতচারী কোর্স । প্রায় ১৪০ জন ছাত্রছাত্রী এই কোর্সটি করার জন্য তাদের নাম নথিভুক্ত করেছিল। প্রথম দিন থেকেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার ছিল চোখে পড়ার মতো।

ব্রতচারী হলো গুরুসদয় দত্ত কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি সামাজিক ও আধ্যাত্মিক আন্দোলন। এটি মূলত লোকনৃত্য এবং সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম, জাতীয় চেতনা এবং নাগরিকত্ববোধ তৈরি করার লক্ষ্যে কাজ করে। ব্রতচারী আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি স্থাপন করা।

আরও বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে, ব্রতচারী আন্দোলন ১৯৩২ সালে গুরুসদয় দত্ত কর্তৃক শুরু হয়েছিল। তিনি বীরভূমে কর্মরত অবস্থায় এই আন্দোলনের বীজ বপন করেন। ব্রতচারী আন্দোলনের মাধ্যমে সঙ্ঘবদ্ধভাবে জাতীয় ও লোকসংস্কৃতি, বিশেষত লোকনৃত্য ও লোকসঙ্গীত চর্চার মাধ্যমে শরীর, মন এবং আত্মার উন্নতি ঘটানো হতো।

ব্রতচারী আন্দোলনের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি হল:

১.জাতীয় ও লোকসংস্কৃতি:
ব্রতচারী আন্দোলনের মাধ্যমে জাতীয় ও লোকসংস্কৃতি, বিশেষত লোকনৃত্য ও লোকসঙ্গীতের চর্চা ।

২.শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতি:
ব্রতচারী আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন করা।

৩.বৈশ্বিক নাগরিকত্ববোধ:
জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের মধ্যে বৈশ্বিক নাগরিকত্ববোধ তৈরি করা ছিল ব্রতচারী আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য।

৪.দেশপ্রেম ও জাতীয় চেতনা:
ব্রতচারী আন্দোলন দেশপ্রেম এবং জাতীয় চেতনা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৫.সংহতি ও ঐক্য:
ব্রতচারী আন্দোলন সকল মানুষের মধ্যে সংহতি ও ঐক্য স্থাপন করার জন্য কাজ করে।

গুরুসদয় দত্ত ব্রতচারী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিত। তিনি ব্রতচারীদের মধ্যে ‘প্রবর্তকজী’ নামে পরিচিত ছিলেন। ব্রতচারীদের অভিবাদন ভঙ্গি, বেশ, মাতৃভাষা প্রীতি, স্বাস্থ্যজ্ঞান, সত্যনিষ্ঠা, সংযম, প্রফুল্লভাব, অধ্যবসায়, আত্মনির্ভরতা খুব জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
এ প্রসঙ্গে আসাননগর মদনমোহন তর্কালঙ্কার কলেজের অধ্যক্ষ জানান “শিক্ষার সাথে সাথে ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন গঠনের ক্ষেত্রেও এই কোর্সটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে”। এই কলেজের ই অধ্যাপক অনিরুদ্ধ সাহা জানান “এই কোর্সটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ জীবনে নিজেদের আত্মরক্ষা কিভাবে নিজেদেরই করতে হয় তা শেখায়। তাই এটি সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কোর্স।”

Leave a Reply