কঠিন চীবর দান উৎসবে সামিল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষেরা

Social

ওয়েব ডেস্ক: চীবর উৎসর্গ করার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের রাঙামাটির রাজবন বিহারে শেষ হলো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দান। বৃহস্পতিবার বিকালে বেইন বা কোমর তাঁত ঘরে সুতা কাটার মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করেন চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। শুক্রবার বিকালে চীবর দানের মাধ্যমে উৎসবে সমাপ্তি ঘটে। উৎসবে তিন পার্বত্য জেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা যোগ দেন।

প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে ভগবান গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় মহাপুণ্যবতী বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুতা কাটা শুরু করে কাপড় বয়ন, সেলাই ও রং করাসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয় বলে একে কঠিন চীবর দান হিসেবে অভিহিত করা হয়। এ পদ্ধতিতে দান করলে কায়িক-বাচনিক এবং মানসিক পরিশ্রম অধিকতর ফলদায়ক হয় বলে বৌদ্ধ শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে।

উৎসব উপলক্ষ্যে রাঙামাটিতে তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশ-বিদেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষের সমাগম ঘটেছে। অনুষ্ঠানকে ঘিরে বন বিহারের আশপাশে বিভিন্ন মনোহারী  দোকান ও নাগরদোলা বসানো হয়েছে। রাঙামাটি শহর এখন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। অনুষ্ঠানকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর তৈরি করে শুক্রবার বিকালে চাকমা রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বনভান্তের প্রতিকৃতিতে চীবর অর্পণ করেন। এরপর একে একে সবাই চীবর দান করেন। কঠিন চীবর দান উৎসবে ধর্মীয় দেশনা দেন বনভান্তের প্রধান শিষ্য প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির।

এছাড়া খাগড়াছড়িতে ধর্মপুর আর্য বন বিহার, পানছড়ির শান্তিপুর অরণ্য কুটির, দিঘীনালা বন বিহার, বাবুছড়ার সাধনা টিলা বন বিহার ও আলুটিলা আলোক নবগ্রহ ধাতু চৈত্য বিহার-এ এই উৎসব সাড়ম্বরে পালিত হয় । কক্সবাজারের রামুতে উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বন বিহার এবং বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র-তে এই উৎসব পালিত হয়। সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, ধর্মসভা, চীবর ও কল্পতরু শোভাযাত্রা, ও আকাশে ফানুস ওড়ানোর মাধ্যমে উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।এছাড়াও ত্রিপুরার আগরতলায় বেনুবন বিহারেও  (Venuban bihar) চীবর দান উৎসব মহাসমারোহে  অনুষ্ঠিত হয় ।

Facebook Page: News Social Barta 24×7