মলয় দে নদীয়া:- নাটকীয়তায় ভরপুর এ সমাজ জনগণ থেকে সরকার প্রত্যেকেরই আনুষ্ঠানিক বাগ্মীতায় অনেক কথাই শুনে থাকি। কিন্তু বাস্তবতার প্রয়োগে পার্থক্য থাকে আকাশ পাতাল! মাস্ক ব্যবহারের জনগণের বিভিন্ন অজুহাত, সরকারি বিধি ব্যবস্থা দু-একদিনের সংবাদপত্রের হেডলাইন, ইলেকট্রনিক্স সংবাদ মাধ্যমের নিউজ ফ্ল্যাশ ছাড়া আর কিছুই নয়! কিছুদিন আগেই স্টেশনে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য চক দিয়ে আঁকা হয়েছিলো বৃত্ত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা সদস্যরা নিয়োজিত হয়েছিলো দেহের তাপমাত্রা নির্ণয়ক যন্ত্র নিয়ে,কর্তব্যরত আরপিএফ এর সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছিল মুখে মাস্ক আছে কিনা তা দেখার জন্য, এমনকি তিনটি যাত্রী আসনের মাঝখানে না বসার সতর্কবার্তা লেখা ছিলো। কিন্তু সেই প্রথম দুই একটা দিনের জন্য! তারপরে সেই ভীড় ঠেসা ঠেসি চিরাচরিত দৃশ্য।
লকডাউন এর পূর্বের শিয়ালদা-শান্তিপুর ট্রেন যোগাযোগের বেশ কয়েকটি ট্রেন বর্তমানে বন্ধ। যার মধ্যে অন্যতম সকাল ৮.৪৫ ডাউন শান্তিপুর শিয়ালদা লোকাল। আবার ঠিক তার আগের ট্রেনটি গ্যালোপিন নটি কামরা বিশিষ্ট। অথচ ওই ট্রেনটি এর আগে বারোবগি হিসেবেই, নিয়মিত যাত্রী পরিষেবা অফিস টাইমে, তাতেই ছিল উপচে পড়া ভিড়! পরের ট্রেনটি বাতিল এবং অফিস টাইমে গুরুত্বপূর্ণ ৭ টা ২৮ এর এই ট্রেনটি ১২ বগির জায়গায় ৯ বগি হওয়ায়, শান্তিপুর থেকেই তিন আসনে চারজন বসার পরেও, দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন শিয়ালদা অভিমুখে। টানা তিন ঘন্টা এভাবেই পৌঁছাতে হচ্ছে গন্তব্যে। তার উপর পর পর বিভিন্ন স্টেশন থেকে ক্রমাগত ওঠা যাত্রীর চাপে ব্যারাকপুর শ্যামনগর অঞ্চল পৌঁছানোর পর পারস্পরিক দূরত্ব তো অনেক দূরের কথা! এক আত্মা হোক বা না হোক, এক দেহে বিলীন হয়ে যাচ্ছেন প্রত্যেকেই! হাঁচি-কাশি নিয়ে ঠান্ডা লড়াই চলছে প্রতিনিয়ত।
শুধু এ ব্যাপারে নয়, প্রতিটি সমস্যার ক্ষেত্রেই রেলযাত্রী সমিতির গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীদের সই সম্বলিত স্টাম্পপ্যাড দিয়ে দেয়ালের কাছে একটি ডেপুটেশন সংঘটিত হয় বটে! তবে নিত্যযাত্রীদের মতে তা নিছকই ফর্মালিটিজ! ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে!
রেল যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই আক্ষেপের সুরে বললেন “যত নিয়মকানুন, দোষ আমাদের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের। কাজ না করলে তো পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার জুটবে না তাই ভিড়ের মধ্যেই যেতে বাধ্য হচ্ছি কাজ করতে। তবে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হলে এ সমস্যা কম হতো “।