NO NRC NO CAB ‘ র ডাক দিল বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ

Social

মলয় দে, বীরভূম : নাগরিক পঞ্জি ও নাগরিক সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিল বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ নামে এক অরাজনৈতিক সংগঠন। শনিবার এক বেসরকারি অনুষ্ঠান ভবনে তাদের আয়োজিত কর্মী সভায় বীরভূম জেলার ১৯টি ব্লকের প্রায় ৪০০জন মানুষ হাজির হন জেলার সংগঠনকে জোরদার করে আন্দোলনকে আরও তীব্রতর করার জন্য।

এদিন উপস্থিত ছিলেন বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক তথা টাটা কোম্পানির ডেপুটি ম্যানেজার তন্ময় ঘোষ, রাজ্য সভাপতি সামিরুল ইসলাম, রাজ্য সহ-সভাপতি অধ্যাপক মুখলেসুর রহমান ও অজয় রায় প্রমুখ। বীরভূম জেলার শাখার ডাকে এনআরসি বিরোধী শিবিরে যোগ দিতে যাওয়ার পথে হাওড়া থেকে রামপুরহাটগামী বিশ্বভারতী ট্রেনের মধ্যে এনআরসি নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হয়।
সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সামিরুল ইসলাম বলেন, আসামে ১৯ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে ১৭ লক্ষ বাঙালি। যার মধ্যে হিন্দু ১২ লক্ষ বাঙালি মুসলমান ও ৭ লক্ষ বাঙালি হিন্দু।
এদিন অধ্যাপক সামিরুল ইসলাম বলেন, এন আর সির পদ্ধতি নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে। কারণ বাড়ির পুরানো দলিল কতজনের আছে? বিশেষ করে যারা ভূমিহীন বা বন্যায় যাদের কাগজ পত্র ভেসে গেছে বা কোন ভাবে নষ্ট হয়েছে, তাদের কি হবে? একমাত্র ভোটার কার্ড বা আধার কার্ডের ভিত্তিতে নাগরিক পঞ্জি করা যেতে পারে। যদি ভোটার কার্ড প্রধান নথি হিসেবে গৃহীত না হয়, তাহলে তার ভিত্তিতে নির্বাচকের ভোট নিয়ে যাঁরা এতদিন নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের জনপ্রতিনিধিত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সেটা আগে বলা হোক। যদি অনুপ্রবেশ হয়ে থাকে, তাহলে সে দায় কার? কারা সীমান্ত পাহারা দিচ্ছে?
নাগরিক সংশোধনী বিল নিয়েও তাঁদের আপত্তি আছে বলে জানান অধ্যাপক সামিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই বিলের সব থেকে খারাপ দিক হল হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে প্রথমে সবাইকে বিদেশি ঘোষণা করা হবে। ৬ বছর সমস্ত নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। থাকতে নির্দিষ্ট চৌহুদ্দির মধ্যে। এই অবস্থা চলতে থাকবে ৬ বছর। তাই দুটোতেই আমাদের আপত্তি আছে। ভেবে দেখুন, ফালু দাস, নিতাই পালের কথা! যাদের লাশ বাংলাদেশ বা ভারত সরকার কেউ নিতে চাইছে না। কিছু রাজনৈতিক নেতা মায়াজাল বিস্তার করতে বলছে, শুধু মুসলিমদের তাড়াবে। তা কিন্তু নয়। মনে রাখবেন হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে প্রথমে ৬ বছর সমস্ত নাগরিক অধিকার হারিয়ে বিদেশি হিসেবে থাকতে হবে। তার কি হবে আমরা কেউ কিছু জানি না। আমরা জেলা জুড়ে সংগঠন তৈরি করে মিছিল, স্ট্রিট কর্নার করব। আমরা বাঙালিকে বঞ্চনার শিকার হতে দেব না।