হুগলির মধ্যবর্তী ভাগীরথী বক্ষে গড়ে ওঠা চড়ে মাত্র ১০ টাকা ভাড়াতে প্রকৃতির কোলে সারাদিন চড়ুইভাতী সহ সময় কাটানোর জন্য রয়েছে অসাধারণ পিকনিক স্পট

Social

মলয় দে নদীয়া:-শীতকাল মানেই পিকনিক। এক দিনের জন্য কর্মব্যস্ততা ফেলে আত্মীয় পরিজন বন্ধুদের নিয়ে সকলে হাতে হাত লাগিয়ে নিজেরাই রান্না করে সারাদিন একসাথে সময় কাটানো তবে হ্যাঁ অবশ্যই বাড়ির থেকে দূরে।

আগের চড়ুইভাতি এখন পিকনিক। কৃত্তিম ভাবে তৈরি করা সুন্দর মনোরম পরিবেশ অথবা প্রকৃতির কোলে। যার যেমন পছন্দ তারা শীতের মাঝে একদিন হলেও গিয়ে থাকেন।
তবে এ সময় বিভিন্ন পিকনিক স্পটে ভিড় থাকার কারণে অনেকে প্রায় শেষ হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক প্রকৃতিকেই বসে পছন্দ করে থাকেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা দূরের পথ কিন্তু গ্রাম বাংলার প্রতিটা জেলায় এখনো রয়েছে মন মুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ সমৃদ্ধ বেশ কিছু জায়গা তা সে অরণ্য হোক বা নদীর পাড়।
নদীয়ার শান্তিপুর দিয়ে বয়ে গেছে ভাগীরথী, পিকনিকের বহু জায়গা থাকলেও ইদানিং ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে প্রায় 40-50 বছর আগে থেকে গড়ে ওঠা ভাগীরথীর বুকে এক সু বিশাল চর।

শান্তিপুরের বড়বাজার ঘাটের ঠিক উল্টো দিকে , ভাগীরথীর মাঝে হুগলি জেলার অন্তর্ভুক্ত এই চর বিস্তৃত জলপথে প্রায় পায়রাডাঙ্গার কাছাকাছি। তবে শুরুর দিকে অর্থাৎ বড়বাজার ঘাটের উল্টোদিকে হুগলি শক্তিপুর ঘাট সংলগ্ন এই চরে যাবার প্রধান রাস্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেখানে দুই জেলার ভাগীরথী তীরবর্তী মানুষজন যাদের ভিটেমাটি ভাঙ্গনের কবলে চলে গেছে তারাই মূলত এই চড়ে চাষাবাদ করে থাকেন। ডিঙ্গি নৌকা করে অথবা গবাদি পশু গরুদের সাথে ভাগীরথী সাঁতরে সকালে চাষের জমিতে চলে আসেন, চাষের কাজ করার পর বাড়ি থেকে আনা খাদ্য খাবার খেয়ে আবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে ফিরে যান বাড়িতে। আগে চরের একাংশে হাঁস-মুরগি গরু এবং ছাগলের খামার সহ গবারচরের এক বৃদ্ধ দম্পতি সেখানে স্থাই ভাবে বসবাস শুরু করলেও, বিদ্যুৎ বিহীন সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাতে অস্বাভাবিক শেয়ালের উৎপাতে এখন আর থাকেন না পাশেই এক মন্দিরে মাঝেমধ্যে বেশ কিছুদিনের জন্য সাধুরা থাকলেও স্থায়ীভাবে বর্তমানে এক সাধক রয়েছেন। তিনি জানাচ্ছেন মানুষের ভয় না থাকলেও সাপ এবং বিভিন্ন জীবজন্তুর উপদ্রব রয়েছে। তবে দিনের বেলা কোনো অসুবিধা নেই। তবে সবচেয়ে বেশি অসুবিধা বর্ষাকালে সুখানুভূতি হয় গরমকালে শীতকালে মাঝেমধ্যে পিকনিক করতে আসা মানুষজনের সান্নিধ্যে কিছুটা ভালো লাগে।
সম্প্রতি কয়েক বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে হুগলি জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় সেখানে বিভিন্ন ভেষজ ঔষধের গাছ এবং লাগানো হয়েছে। তবে রক্ষণাবেক্ষণের তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় না।
দিনে চারবার মাত্র চলে ইঞ্জিন চালিত বড় নৌকা ।মাত্র ১০ টাকা এবং ১০ টাকা ফিরে যাওয়ার ভাড়ায় পৌঁছে যাওয়া এবং তারপর বিনা খরচে সম্পূর্ণ নির্জন এই দ্বীপে সারাদিন চড়ুইভাতি সহ ঘন জঙ্গল এবং মাঝে মাঝে কৃষকদের চাষের মাঠ দেখে সময় কাটানো এক অন্য অনুভূতি। ফিরে আসার সময় ভাগীরথী বক্ষে সূর্যাস্ত এবং চরের উঁচু নিচু অংশে লাগানো সারিবদ্ধ গাছ, রংবেরঙের বিভিন্ন আনাজ এবং রবি ফসলের ক্ষেতে মোবাইল বন্দি করতে এক নিমিষেই শেষ হয়ে যাবে দিনের পুরো সময়।

Leave a Reply