মলয় দে নদীয়া:- শতবর্ষ প্রাচীন আনুমানিক প্রায় সাড়ে চারশ বছরের পুরনো এক সুবিশাল মহীরূহ গাছ কাটা নিয়ে সাতসকালে রানাঘাটে প্রতিবাদে সামিল হলো এলাকাবাসী ও পরিবেশকর্মীরা । সচেতন নাগরিক এবং এলাকাবাসীদের মতে আজ সোমবার অধিকাংশ দোকান পাশারী বন্ধের সুযোগ নিয়ে ফাঁকা দেখেই সাত সকালে পুরো গাছটি কাটার উদ্দেশ্যে ডাল পালা ছাটা হচ্ছিল রানাঘাট পুরসভার পক্ষ থেকে। তাদের সমবেত প্রতিবাদে আপাতত বন্ধ হয় , তবে তাদের যুক্তি গাছ যদি বিপদজনক হয় তাহলে নোটিশ কোথায়! বিপজ্জনক বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে নোটিশ লাগানো হয় গাছের ক্ষেত্রে কেন তা নয়?
চাঞ্চল্যকর এবং যথেষ্ট উদ্বেগ জনক ঘটনাটি নদীয়ার রানাঘাট জিএনপিসি রোডে টকিজের সামনে। সেখানে একটি সুবিশাল মেহগনি গাছ আজ পুরসভার পক্ষ থেকে কাটতে উদ্ধত হলে পরিবেশ কর্মী সচেতন নাগরিক এবং স্থানীয় মানুষরা বাধা দেন।
এই বিষয়ে বাধাদানকারীদের মধ্য থেকে পরিবেশ কর্মী সমীর শাসমল জানান সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি সকাল থেকে সকলকে আহ্বান করেন প্রতিবাদে সামিল হওয়ার জন্য ।
পরিবেশ নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থার দায়িত্বে থাকা ড: মুনমুন কীর্তনীয়া জানান, যদি কোন বিপদজনক পরিস্থিতি তৈরি হয় তা সাধারণ মানুষকে অবগত না করেই পুরসভার এই হঠকারী সিদ্ধান্ত আর তার বিরুদ্ধে আজ তাদের প্রতিবাদ। যদিও রানাঘাট পুরসভার বাস্তুকর সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় জানান সরকারি নিয়ম মেনেই তারা বনদপ্তরের অনুমতি নিয়ে ই টেন্ডার ডেকে অকশন করেছেন ওই বিপদজনক গাছটি এক্ষেত্রে যদি সকলের আপত্তি থাকে তাহলে লিখিতভাবে পুরো সবাই জানালে স্থগিত রাখা হবে ওই গাছ কাটা।
তবে গাছটি যে বিপদজনক সে বিষয়ে কে বা কারা পুরসভায় অভিযোগ জানিয়েছেন সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু না বলতে পারলেও বলেন সব ক্ষেত্রে লিখিত অভিযোগ থাকে না অনেকেই আছে, মৌখিকভাবে এসে জানিয়ে গিয়েছিলেন। পরিবেশ কর্মীদের প্রশ্ন এত প্রাচীন সুবিশাল গাছ কাটার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মৌখিক অভিযোগই যথেষ্ট! অথচ স্থানীয় দোকানদার যাদের অসুবিধা হওয়ার কথা তারাই এই আন্দোলনের সামিল হয়েছে বলে দাবি পরিবেশ কর্মীদের। তবে বিপদজনক পরিস্থিতি রেলপথ আকাশ পথ সড়ক পথে হতে পারে তা বলে সব যান চলাচল বন্ধ থাকবে এমনটা নিশ্চয়ই নয়! ওই গাছ তলায় একটি চপের দোকানের রান্নার আগুন গাছ থেকে ক্রমশ ক্ষতি করছিলো সে বিষয়েও পরিবেশ কর্মীরা আপত্তি জানিয়েছিলেন বলেই জানান তবে তার রুজি-রুটিতে যাতে কোন ব্যাঘাত না ঘটে সে ব্যাপারেও পুরসভা কে বিকল্প ব্যবস্থার অনুরোধ করেন তারা।
ওই গাছে বিজ্ঞাপনের বিভিন্ন বোর্ড লাগানো হয়েছিল পেরেক দিয়ে তাও পরিবেশ কর্মীরা খুলে গাছের স্বাস্থ্যরক্ষার কথা ভেবেছিলেন। শুধু সচেতন নাগরিক কিংবা আইন নিয়ম এর বহির্ভূতভাবেও রাজ্য কেন্দ্র উভয় সরকারের তত্ত্বাবধানে গাছ রক্ষার দায়িত্ব বর্তায় পুরসভার উপর আর সেই পুরসভা থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা করেছেন সচেতন নাগরিকরা।