মলয় দে নদীয়া:- বাস্তুতন্ত্র রক্ষার উদ্দেশ্যে প্রথা মেনে এখনও প্রতি বছর পৌষ মাসের অমাবস্যায় কুমির পুজোর উৎসব মানজেম থাপনি পালন করা হয়। মন্ত্র উচ্চারণ করে, কুম্ভারজুয়া খালে নতুন ফসল, মাছ, মুরগি ও মুরগির ডিম উৎসর্গ করা হয় কুমির দেবতার জন্য।
জ্যান্ত কুমির পুজো করা দুরূহ তাই মাটির তাল দিয়ে কুমির বানিয়ে পুজো করা হয় গ্রাম বাংলার বিভিন্ন এলাকায়। আমরা এরকমই এক পুজোর সন্ধান পাওয়া গেল নদীয়া জেলার শান্তিপুর বাবলা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বিবেকানন্দ নগর মধ্যমপাড়া জোড়াপুকুর এলাকায়।
পূজারী তাপস চ্যাটার্জি বলেন, বর্তমানে কুমিরপূজা নামে প্রচলিত থাকলেও আসলে এ পূজার মূল নাম বাস্ত পূজা। যাদের বাস্তভিটা অর্থাৎ বসতি রয়েছে, তারাই শত শত বছর ধরে এ পূজা দিয়ে আসছেন।জনপদের বাস্তভিটা রক্ষায় বাস্ত দেবীকে সন্তুষ্ট করতেই বাংলা বছরের পৌষ সংক্রান্তিতে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। আর বাস্ত দেবী কুমিরের পিঠে চড়ে আসেন।পূজায় কুমিরই প্রধান অনুসঙ্গ হওয়ায় মানুষের মুখে মখে কুমির পূজা নামে বর্তমানে প্রচলিত। এদিকে পূজার এ কুমিরকে নিয়েও রয়েছে নানা লোক কাহিনী। অনেকের বাড়িতে পুজো হয়ে থাকে তবে সাথে কচ্ছপেরও পুজো হয়।
পূজা শেষে মাটির তৈরি এ কুমিরের গলা কাটতে হয়। গলাকাটে প্রতীকী হত্যা করা না হলে মাটির কুমির জীবন্ত হয়ে জনপদের মানুষকে আক্রমণ করতে পারে বলেও জনশ্রুত রয়েছে। এলাকার অধিবাসীবৃন্দ জানান দীর্ঘ চল্লিশ বছর যাবৎ, এই পুজো হয়ে আসছে। এই উপলক্ষে সন্ধ্যায় সকলে একত্রিত হয়ে খিচুড়ি প্রসাদ খেয়ে থাকেন । পূজাকে কেন্দ্র করে আশেপাশের বহুগ্রাম থেকে দর্শনার্থীরা আসার ফলে মহোৎসবে পরিণত হয়েছে। এই উপলক্ষে প্রচলিত একটি গান, এলাকাবাসীরা গিয়ে থাকেন বাস্তু দেবীকে খুশি করতে।