তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়ে ফাস্ট সেমিস্টারে ভর্তি হয়েছে মাত্র ৮০৩ জন। যেখানে অনার্স ও জেনারেল মিলিয়ে মোট আসন সংখ্যা ২৪০০। ১৭ টি অনার্স বিষয়ে একটিরও সব আসন পূরণ হয়নি। অধ্যাপকদের মধ্যে শুধুই হতাশার ছবি কলেজের ইতিহাসে এত কম সংখ্যক ছাত্রছাত্রী কোনদিনও ভর্তি হয়নি। ভর্তির এই বেহাল দশা কলেজ কর্তৃপক্ষকে উদ্বেগে ফেলে দিয়েছে। কারণ গত ২০১৬ সালের পর আগামী দু এক মাসের মধ্যে কলেজের ভিজিট হবে এ গ্রেড ধরে রাখা নিয়ে কলেজের অধ্যাপকদের গলায় হতাশার সুর।
তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয় এর অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন বলেন আমাদের কলেজে পঠন-পাঠন বেশ ভালো গত পাঁচ বছরে পাঁচজন বিশ্ববিদ্যালয়ের টপার হয়েছেন। ২৪০০ আসনের মধ্যে এসসি এস টি ওবিসি ৫০% সংরক্ষণ রয়েছে, তারপরে ১২০০ আসনের মধ্যে ৮০৩ জন ভর্তি হয়েছে। তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়ে অংক অনার্সে মোট আসন ১২০ সেখানে ভর্তি হয়েছে মাত্র ২২ জন, ইংরেজি অনার্সে মোট ১৩৮ টি আসন, ভর্তি হয়েছে মাত্র ৭৫ জন। ইতিহাসে ১০০ টি আসনে ২৩ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছে, একইভাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ২১ জন, দর্শনে ২১ জন, একাউন্টান্সি তে ২৭ জন, বোটানিতে ২৪ জন, কেমিস্ট্রিতে ৩১ জন, কম্পিউটার সায়েন্সে ১০ জন, ভূগোলের ১৭ জন ভর্তি হয়েছে। সাধারণত ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রায় ২০% ড্রপ আউট হন, বিগত বছরগুলিতে এই কলেজে ১৬০০ থেকে ১৭০০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হতেন, তাদের মধ্যে প্রায় ১২০০ জন পরীক্ষা দিতেন এবার সেই সংখ্যাটা এক ধাক্কায় কমে ৮০৩ এ নেমে গিয়েছে অর্থাৎ মোট আসনের এক তৃতীয়াংশ সীট পূরণ হয়েছে।
তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়ের ভৌগলিক অবস্থান খুব ভালো নয়। তমলুকের মানিকতলা মোড় থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার টোটো বা অন্য যানবাহনে আসতে হয়। কলেজ পর্যন্ত বাস আসে না। এছাড়াও কলেজের সংখ্যাও বেড়েছে। অন্যান্য কলেজে ছাত্রছাত্রীরা চলে যাওয়ায় তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয় ছাত্র সংখ্যায় এবারে অনেকটাই কম ভর্তি হয়েছে।
প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বিধানচন্দ্র সামন্ত বলেন বর্তমান পশ্চিমবঙ্গে যা অবস্থা তাতে করে ছেলে মেয়েরা শিক্ষিত হয়ে কি করবে? কোন কিছুতেই চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া হচ্ছে না। ফলে শিক্ষিত বেকার যুবকরা দিশেহারা। যদিও তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয় এর রসায়ন বিভাগের অধ্যাপকদের দাবি তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয়ে পড়াশোনা খুবই ভালো মানের হয়। শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে পরিশ্রমের প্রবণতা অনেকটাই কমেছে। তাম্রলিপ্ত মহাবিদ্যালয় এর ভৌগোলিক অবস্থান অনেকটাই দায়ী। বিগত বছরগুলি তুলনায় এ বছর ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা দেখে অনেকটাই চিন্তার ভাঁজ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের মধ্যে।