সততার নজির টোটো চালকের ! নগদ ৩০ হাজার টাকাসহ যাত্রীর মূল্যবান কাগজপত্রের ব্যাগ ফেরত দিলেন টোটো চালক

Social

মলয় দে নদীয়া:- নদীয়ার শান্তিপুর এবং কৃষ্ণনগরের সংযোগস্থল গোয়াল পাড়ার বাসিন্দা বিষ্ণুপদ মন্ডল গতকাল সকালে শান্তিপুরের আলুইপাড়া থেকে প্যাসেঞ্জার নিয়ে এসেছিলেন শান্তিপুর রেজিস্ট্রি অফিসে, তাদের কাজকর্ম সারতে প্রায় তিন ঘন্টা লাগবে জেনে তিনি শহরের নানান প্রান্তে ভাড়া খেটে বেড়াচ্ছিলেন।

আনুমানিক সকাল এগারোটা নাগাদ শান্তিপুর নিশ্চিন্তপুরের বাসিন্দা দিপালী ব্যানার্জি এবং শান্তিপুর হাসপাতালে অতীতে এক সময় সহকর্মী হিসেবে কাজ করা আরতি ঘোষকে নিয়ে তিনি এসেছিলেন পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক এ টাকা তুলতে ১৫ হাজার টাকা তুললেও আরো ১৫০০০ টাকা তার ব্যাগে ছিল রাখা সাথে পেনশন বুক এবং অন্যান্য বেশ কিছু দরকারি কাগজপত্র। বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে বিষ্ণুপদ মন্ডল এর লাল রঙের একটি টোটো ভাড়া করেন তারা। যদিও কিছুটা যেতেই মনে পড়ে ইলেকট্রিক জমা দেওয়ার প্রয়োজন তাই সেখানেই তাকে সম্পূর্ণ ভাড়া মিটিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় এরপর ইলেকট্রিক বিল দিয়ে অন্য একটি টোটোতে উঠতে গেলে মনে পড়ে ব্যাগের কথা। ততক্ষণে ওই লাল টোটোর মালিক বিষ্ণু বাবু শ্যামচাঁদ মোড় থেকে অন্য ভাড়া নিয়ে গিয়েছিলেন স্টেশনে সেখানে গিয়ে প্যাসেঞ্জার নামানোর পর কোন এক পথে চলতি মানুষ পেছনের সিটে পড়ে থাকা ওই ব্যাগের ব্যাপারে অবহিত করেন। কিন্তু সদ্যনামা ওই প্যাসেঞ্জার জানায় ব্যক্তি তাদের নয়, বিষ্ণু বাবু তখন ওই দুই বৃদ্ধাকে খোঁজ করতে থাকেন প্রথমে ইলেকট্রিক অফিসের সামনে পরবর্তীতে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের সামনে ।

অন্যদিকে শান্তিপুর থানায় সমগ্র বিষয়টি অবহিত করে ওই দুই বৃদ্ধা বাড়ি পৌঁছেছিলেন ডাকঘর থেকে খবর পেয়েছেন তাদের খোঁজ করছেন টোটো চালক । অবশেষে উপযুক্ত মালিকের হাতে টোটো চালক তুলে দেন ব্যাগ। অবসরপ্রাপ্ত ওই দুই বৃদ্ধা ব্যাগ হারিয়ে যাওয়ার শোকে প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, প্রাপ্তির পর স্বস্তি অনুভব করেন। ব্যাগের সমস্ত কাগজপত্র এবং অর্থ মিলিয়ে বুঝে পাওয়ার পর টোটো চালক কে ৫০০ টাকা বকশিশ দেন। যদিও টোটো চালক প্রথমে তা নিতে না চাইলেও সকলের অনুরোধে তা নিতে বাধ্য হন। তিনি অবশ্য বলেন এখানে খুঁজে না পেলে থানায় যোগাযোগ করতেন, তবে ব্যাগের মধ্যে কি রয়েছে তা দেখার অধিকার তারাই তার নেই তাই তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেননি।

অন্যদিকে ব্যাগ হাতে পেয়ে টোটো চালকের এই সততার নিদর্শন দেখে তারা অভিভূত। বলেন সংখ্যা কম হলেও উনাদের মতন সৎ মানুষ আজও আছেন তাই তাদের মতন বৃদ্ধরা বের হতে পারেন রাস্তায়। যদিও তাদের অসাবধানতার বিষয়ে তারা লজ্জিত।
তবে পথ চলতি উপস্থিত অনেকেই বলেন সৎ আছে বলেই হয়তো টোটো চালাতে হচ্ছে ।

Leave a Reply