চড়ক সমাপ্ত হলে গাছ ভাসিয়ে দেওয়া হয় চূর্ণীতে ! চড়কের দিন সকালে ভেসে ওঠে, জানুন বহু প্রাচীন শিব নিবাসের চড়ক কাহিনী

Social

মলয় দে নদীয়া :-চরক পূজা পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোক উৎসব। বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী, প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিতে বা চৈত্রের শেষ দিনে এ পূজা অনুষ্ঠিত হয় এবং বৈশাখের প্রথম দু-তিন দিনব্যাপী চড়ক পূজার উৎসব চলে। এটি চৈত্র মাসে পালিত হিন্দু দেবতা শিবের গাজন উৎসবের একটি অঙ্গ।

কথিত আছে, এই দিনে শিব-উপাসক বাণরাজা দ্বারকাধীশ কৃষ্ণের সংগে যুদ্ধে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে মহাদেবের প্রীতি উৎপাদন করে আকাঙ্ক্ষায় ভক্তিসূচক নৃত্যগীতাদি ও নিজ গাত্ররক্ত দ্বারা শিবকে তুষ্ট করে অভীষ্ট সিদ্ধ করেন। সেই স্মৃতিতে শৈব সম্প্রদায় এই দিনে শিবপ্রীতির জন্য উৎসব করে থাকেন।।
অনুরূপভাবে, নদীয়ার ১৮ আগস্ট পরিচালক সমিতির উদ্যোগে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও নববর্ষের আগমন সন্ধিক্ষণে এবং পুরাতন বৎসরের অবসান লগ্নে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শিবলিঙ্গের মন্দির প্রাঙ্গণে চরক পূজা। এই শিব নিবাসের চড়ক পূজার মূল ঐতিহ্য এবং বৈচিত্রবাহী আকর্ষণ হল প্রতি বছর চড়ক পূজার চরক গাছ শিবনিবাস এর শিবলিঙ্গের পার্শ্ববর্তী চূর্ণী নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। সারা বছর এই চড়ক গাছ চূর্ণী নদীতে দৃষ্টিগোচর না হলেও প্রতিবছর গাজন বা চরক পূজার আগের দিন অর্থাৎ নীল পূজার দিন প্রত্যুষ কালে দৃষ্টিগোচর হয় সেই গাছ অর্থাৎ ডাঙায় ফিরে আসে সেই চরক গাছ। এই ঘটনা গভীরভাবে ছাপ ফেলে শিবনিবাস বাসী তথা নদিয়া বাসীর কাছে। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের প্রতিষ্ঠিত শিব মন্দিরের চরক উৎসবে মূল বৈশিষ্ট্য হল চরক গাছের গোড়ায় শিব দুর্গার পূজা দেওয়া হয়। এবং বিভিন্ন খ্যাতনামা সন্ন্যাসীরা এসে উপস্থিত হন এবং পিঠে বরছি ফুটিয়ে চরক আবর্তন করেন। পাশাপাশি পিঠে বর্ষি বেঁধে রথ টানা প্রচলন আছে ।শিব ঠাকুর অত্যন্ত জাগ্রত হওয়ায় কোন ত্রুটি বা কোন ভুল ভ্রান্তি হলে সয়াল ওঠার ঘটনা কোন আশ্চর্য ঘটনা নয়। প্রত্যেক বছর ১৮ই আগস্ট কমিটির উদ্যোগে এই বৃহৎ চড়ক মেলা তথা গাজন উৎসবের আয়োজন করা হয় যা ভক্তি ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা। কেন্দ্র করে হাজার হাজার ভক্ত সমাগম হয়।।

Leave a Reply