করোনায় টিউশন বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং মায়ের ক্যান্সারের চিকিৎসার খরচ যোগাতেই তন্তুজীবী পরিবারের শুভজিতের মৃৎশিল্পী হয়ে ওঠা

Social

মলয় দে নদীয়া:-জন্মদাত্রী মা ক্যান্সারে আক্রান্ত, বাবা বয়স জনিত কারণে এবং রুগ্ন হস্ত চালিত তাঁত শিল্পে বেরোজগারে ।

সংসারের হাল ধরতে ২০১৪ সালে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা না করেই একমাত্র উপার্জনকারী হিসাবে নদীয়ার শান্তিপুর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে সাহা পাড়া স্ট্রিটের বাসিন্দা শুভজিৎ দে বেছে নিয়েছিলো আঁকা এবং পড়ানোর টিউশনের পথ।মা ছন্দা দে দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত । অভাবী পরিবারে জন্মদাত্রী মায়ের চিকিৎসার খরচ যোগাতে, মৃন্ময়ী মায়ের মূর্তি বানানো শুরু করে শুভজিৎ। যদিও তার পরিবারে, কেউ কখনো মূর্তি বানানোর কাজ করেনি, প্রচলিতভাবে কুম্ভকার ঘরের সন্তান নয় সে।পরিবারের তিনশ বছরের প্রাচীন কালীপুজো ৩০ -৪০ বছর যাবৎ বন্ধ হয়ে থাকার পর শুভজিতের হাতে তৈরি মূর্তিতে আবারো পুজো শুরু হয়েছে গত চারবছর যাবত। সেই থেকেই আত্মবিশ্বাস বাড়ে তার।

ছোটবেলা থেকেই মায়ের মাখা আটা, উঠোনের মাটি নিয়ে ছোটখাটো মূর্তি বাড়ানোর চেষ্টা করত, অর্থাভাবে কোনদিনই তা নিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ পাইনি সে।
স্ত্রী মমতা দে তার হাতের কাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়েই এই বাড়িতে আসে। পড়াশোনা এবং আঁকার ছাত্র-ছাত্রী ঘর ভর্তি হয়ে থাকলেও, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সমস্ত পরিস্থিতি ওলট-পালট হয়ে যায়। বিকল্প পেশা হিসেবে স্বামীর হাতের কাজ সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করতে থাকে স্ত্রী, গত চারবছর যাবত বেশ কয়েকটি মিনি আর্মেচার দূর্গা কালি সরস্বতীএবং অন্যান্য প্রতিমা বানিয়ে অর্থ রোজগারের সুলুক সন্ধান পায় । তার তৈরি মূর্তি সুদূর কানাডা পৌঁছেছিলো কয়েক বছর আগে কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এখন শুভজিতের কাজের সুখ্যতি , এ বছরেও সে পেয়েছে পাঁচটি দুর্গামূর্তির অর্ডার।

তবে এ ধরনের মূর্তি বিসর্জন না হওয়ার কারণে একই ব্যক্তি দ্বিতীয়বার অর্ডার দিতে বেশ কিছু বছর কেটে যায়।
পরিবারের থেকে সংবাদমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানানো হয়েছে , শুভজিৎ এখন তার নিজের সংসার কোন মতে সামলাতে পারছে তবে তো তাদের আত্মবিশ্বাস, সংবাদমাধ্যমের সহযোগিতায় তারা নিশ্চয়ই প্রতিষ্ঠা লাভ পাবে।

Leave a Reply