মলয় দে নদীয়া:-গ্রামবাংলার ঐতিহ্য বজায় রাখতে এখনো প্রথা অনুযায়ী অষ্টক গান করে চলেছেন সন্ন্যাসীরা।
বিগত ১০০ বছরের ঐতিহ্য বজায় রাখতে শান্তিপুর স্টিমারঘাট এলাকার সন্ন্যাসীরা এবং নীল পূজো কমিটির উদ্যোগে এখনো চৈত্র মাস পরতেই অষ্টক গান পরিবেশন করে থাকেন সন্ধ্যের পর সমস্ত কাজকর্ম সারার পর। কি এই অষ্টক গান ?
সন্তানের সুখ, সৌভাগ্য ও দীর্ঘ জীবনের কামনা করে এই ব্রত পালনের মধ্যে দিয়ে করে থাকেন বাঙালি ঘরের সব মায়েরা। বাংলার লোককথা মতে, নীলসন্ন্যাসীরা ও শিব-দুর্গার সঙেরা পুজোর সময়ে নীলকে সুসজ্জিত করে গীতিবাদ্য সহযোগে বাড়ি বাড়ি ঘোরান। ভিক্ষা সংগ্রহ করেন বাড়ি বাড়ি। নীলের এই গানকে বলা হয় অষ্টক গান। ওইদিন সন্ধ্যেবেলায় সন্তানের মায়েরা সন্তানের কল্যাণার্থে প্রদীপ জ্বালিয়ে শিবপূজা করে সারাদিনের উপবাস ভঙ্গ করেন। সারাদিন কোনও রকম খাবার, পানীয় গ্রহণ করেন না তাঁরা। সারাদিন উপোস রেখে সন্ধের সময়য় মহাদেবের পুজো করে, তাঁর প্রসাদ খেয়ে তবে উপবাস ভঙ্গ করেন মায়েরা। এ বছর ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে নীল ষষ্ঠীর ব্রত। নীলের পুজো করে সন্তানের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করেন মায়েরা।
নিম বা বেল কাঠ থেকে নীলের মূর্তি তৈরি হয়। নীলপূজার আগের দিন অধিবাস পালন করা হয়। গভীর রাতে পালন করা হয় দেবতাদের হাজরা পূজা অর্থাত বিয়ে উপলক্ষে সকল দেবতাকে আমন্ত্রণ করা। এছাড়া হাজরা পূজায় শিবের চেলা বা ভূত-প্রেতের দেবতাকে পোড়া শোল মাছের ভোগ দেওয়া হয়। পরদিন নীলপুজোর সময় নীলকে গঙ্গাজলে স্নান করিয়ে নতুন লালশালু কাপড় পরিয়ে দেওয়া হয়। তবে অন্ততপক্ষে সাত বাড়িতে নীলকে ঘোরানো হয়।