৭ গ্রামের সোনার আংটি কুড়িয়ে পেয়েও ফিরিয়ে দিল ক্লাস ওয়ানে পড়া মেয়ে বিজিতা

Social

মলয় দে নদীয়া :- ছেলের হাতে থাকা আনুমানিক ৪০ হাজার টাকার সোনার আংটি , ফেরত পেলেন টিনের চাল বেড়ার বাড়িতে বাস করা এক পরিবারের কাছ থেকে । উপহার উপঢৌকন কোনটাই রাজি নন, অভাবই তাদের গর্ব, সন্তানের শিক্ষা।

আংটি ফেরত পেয়ে, উপহার নিতে অস্বীকার করা পরিবারের উদ্দেশ্যে , স্বীকারোক্তি গরিবেরাই প্রকৃত শিক্ষিত, ধনীরা নন।

নদীয়ার শান্তিপুর শহরের পঞ্চানন তলার বাসিন্দা, মৃত্যুঞ্জয় হালদার এলাকার সম্ভ্রান্ত এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় বেজপাড়ার মাঠে, তার ছেলে সায়ন খেলতে গিয়ে, হাতের আঙুলে থাকা সাত গ্রামে ওজনের সোনার আংটি যা প্রায় ৪০ হাজার টাকা মূল্য, হারিয়ে ফেলে।

অন্যদিকে ওই মাঠের এক কোনায় টিনের ঘর টালির চালের বাড়ির বিশ্বজিৎ বর্মনের ক্লাস ওয়ানে পড়া মেয়ে বিজিতা , খেলতে গিয়ে সেটা কুড়িয়ে পায়। মা-বাবাকে তা দেখাতেই, প্রতিবেশীদের কাছে বিষয়টি ব্যক্ত করেন তারা। অন্যদিকে গতকাল রাতের পর আজ সকালে , বিশ্বজিৎ বাবু ফোন করে জানান, একটি আংটি পেয়েছে তার মেয়ে, উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে নিয়ে যেতে।

প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী মৃত্যুঞ্জয় বাবুর স্ত্রী সোমা হালদার ছেলে, সায়ন এবং দেওর কে নিয়ে এসে ফেরত নেন ওই আংটি। অত্যন্ত প্রান্তিক ওই পরিবারকে সহযোগিতা মেয়েকে উপহার দেওয়ার চেষ্টা করেও বিফল হন। তবে তিনি , স্বীকার করেন, অভাবী পরিবারেই সততা লক্ষ্য করা যায়। আজ কিছু সহযোগিতা করতে পারলে নিজেদের ভালো লাগতো তবে, আগামী দিনে ওই পরিবারের দিকে তাদের নজর থাকবে বিশেষভাবে। স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে , কথা বলে আবেদন করা সরকারি ঘর যাতে মঞ্জুর হয় সে ব্যাপারেও খেয়াল রাখবেন তারা।

নিজেদের এক ছেলে মেয়ের সাথে উনাদেরও এক ছেলে এক মেয়ে মিলে মোট চার ছেলেমেয়ে হলো।
আংটি প্রাপক বিজিতার মা, পার্বতী বর্মন জানান, স্বামী অন্যের কাপড় মাড় উপার্জিত সামান্য অর্থ দিয়ে কোনোরকমে সংসার চালান, তবে ছেলে মেয়েকে সেই শিক্ষাই দিয়েছেন, অন্যের জিনিস নেওয়া অন্যায়। যদি নিজেদের কষ্টার্জিত সামান্য কিছু হারায়, তাহলেও কতটা কষ্ট হয়।
অত্যন্ত স্বাভাবিক অথচ দুর্লভ এই নজিরবিহীন ঘটনায় প্রতিবেশীরাও শুভেচ্ছা জানায় ওই পরিবারকে ।

Leave a Reply