মলয় দে নদীয়া :-ছট পুজো এমনই এক পার্বণ‚ যেখানে‚ যে দেবতাকে পুজো করা হয়‚ তাঁর উল্লেখ উৎসবের নামে সাধারণত করা হয় না।
এই পুজো আসলে সূর্যদেব এবং তাঁর স্ত্রীর উপাসনা তবে তার নাম কেন হল ছট?
আসলে ছট শব্দটা প্রাকৃত এসেছে সংস্কৃতের ষষ্ঠ শব্দ থেকে। দীপাবলীর ঠিক ৬ দিনপরে কার্তিক মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে পুজো করা হয় সূর্যদেবকে তাই এর নাম ছট পুজো ।
ভারতের বিহার‚ ঝাড়খণ্ড এবং পড়শি দেশ নেপালের গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল ছট। বিশ্বাস করা হয়‚ বৈদিক যুগের আগে থেকেই ছট পুজো বা সূর্য উপাসনার চল ছিল
মহাভারতে পঞ্চ পাণ্ডব এবং দ্রৌপদী পালন করেছিলেন এই উৎসব।
রামায়ণেও আছে রাম সীতার ছট পুজোর কথা। অর্ঘ্য অর্পণ করেকৃতজ্ঞতা জানানো হয় সূর্যদেব এবং তাঁর স্ত্রীকে(ছটী মাঈ )। দীপাবলির চারদিন পর শুরু হয় মূল ছট পুজোর প্রাক পার্বণ। যাঁরা ব্রত রাখেন তাঁরা এদিন নদীতে অবগাহন(মূলত ভারতের গঙ্গা এবং নেপালের কোশী)করেন। তারপর শুদ্ধ ঘিয়ে রান্না করেন খিচুড়ি আর কুমড়ো সেটাই এদিনের খাবার।
এর পরের দিন খেতে হয় ক্ষীর আর চাপাটি। সারাদিন উপবাসের পরে রাতে খেতে হয় সেটি। এ বার শুরু দীর্ঘ উপবাস।
তৃতীয় দিন অর্থাৎ দীপাবলীর পর থেকে ষষ্ঠ দিন হল উৎসবের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। ছট ব্রতীরা উপবাসে থেকে নদীতে দাঁড়িয়ে সূর্যদেবতার উদ্দেশে ফল এবং অন্যান্য অর্ঘ্য উৎসর্গ করেন। প্রণাম করা হয় উদয়গামী আর অস্তগামী সূর্যদেব ও তাঁর স্ত্রীকে। চতুর্থ দিন একইভাবে অর্ঘ্য উৎসর্গ করার পরেই ব্রতীরা ভঙ্গ করেন উপবাস।বিশ্বাসীদের বিশ্বাস‚ ছটপুজোয় সব মনোকামনা পূর্ণ করেন সূর্যদেব। এমনকী‚ কুষ্ঠরোগীও নাকি সুস্থ হয়ে যায়| সংসারের মঙ্গলকামনায় গৃহিণীরাই এই পুজো করে থাকেন। কলা-সহ বিভিন্ন ফল‚ ঠেকুয়া‚ ক্ষীর আর মিষ্টি হল পুজোর প্রসাদ।