শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে মাথায় হাত মৃৎশিল্পীদের

Social

মলয় দে নদীয়া :- সামনেই সরস্বতী পুজো । কিন্তু বিষ্ময়ের কথা হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ , আর সেই কারণেই কি বাগদেবীর মুখ ভার ? উঠছে প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে। সবাই সবাইকে প্রশ্ন করছে , কিন্তু এর উত্তর মেলা যে বড়ই জটিল । সত্যি কি আজব দুনিয়া, আর সে কারণেই বোধ হয় সরস্বতীর মুখ ভার । শান্তিপুর চোগাচা পাড়া কে এক কথায় শান্তিপুরের কুমোর টুলি বলা যেতে পারে , মৃৎ শিল্পীরা যখন বাগদেবী প্রস্তুত করেন সেই সময়ে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা প্রতিমা লক্ষ্য  করতে করতে যায় কোন প্রতিমা টি তাদের স্কুলের , কোনটি তাদের ক্লাবের ও কোন টি তাদের বাড়ির প্রতিমা। কিন্তু এবছর তো লাগাতার ছুটির মরশুম , আর সেই কারণেই বাগ দেবীর মুখ ভার । এমত পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে কোনো প্রতিবাদ নেই কোনো রাজনৈতিক দলের।

এমত পরিস্থিতিতেও তৈরি হচ্ছে শান্তিপুরের কুমোর টুলি, কেউ বাঁধছেন খড় , কেউ মাখছেন মাটি , কেউ ব্যস্ত মাটির প্রলেপ দিতে , আবার অনেকেই ব্যস্ত রং তুলি নিয়ে । তবে সমস্ত মৃৎ শিল্পীদের কণ্ঠে হতাশার করুন সুর , প্রত্যেকেই আমাদের সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে অকপট জানালেন তাদের কাজ কমেছে আগের তুলনায় যথেষ্ট । তবে অনেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে তাদের কাজ কমেছে এমনটাই তুলে ধরলেন । মৃৎশিল্পি প্রশান্ত পাল জানালেন গত বছরের তুলনায় এবছর কাজ কম , এবারে তার প্রতিমার সংখ্যা সর্বমোট ৫০ টি । বিগত বছর আরো খান দশেক বেশি ছিল । সনাতন পাল জানাচ্ছেন যে সমস্ত স্কুল বন্ধ সেই সমস্ত স্কুল থেকে তার কাছে আগে যে অর্ডার আসতো সেগুলো আসেনি । তাই এবছর তার তৈরি প্রতিমার সংখ্যা ৩০ টি । তবে আশ্চর্য তম হিসাব দিলেন মৃৎ শিল্পী জয়দেব পাল । তিনি জানালেন বিগত বছর তার কারখানায় ৯০ টি প্রতিমার অর্ডার ছিল এবছর সেটা কমে মাত্র ১৫ টা । আবার মৃৎ শিল্পী নিমাই পাল জানালেন অনেক জায়গা থেকেই প্রতিমার অর্ডার আসেনি তাই কাজের হার অনেক কম ।

দীনবন্ধু পাল জানালেন তাদের ছোটো কাজ বেশি কিন্তু তাহলেও এবছর যেন কাজের চাপ কম অন্যান্য বছরের তুলনায় । আবার মৃৎশিল্পী সুধীন পাল জানালেন অনেকেই পুজো করবে কিন্তু কোনো রকমে । এবছর অর্ডার কম এবং কাজের চাপও কম । তবে এবছর সরস্বতী পুজো কিভাবে হবে ? আদৌ সমস্ত স্কুলে পুজো অনুষ্ঠিত হবে তো ? ভোট হচ্ছে , মিছিল মিটিং হচ্ছে , অনেক প্রতিষ্ঠান ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়েই চলছে । কিন্তু সমস্যাটা শুধু ই যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক , অন্তত সপ্তায় দুটো দিনও ক্লাস করানো যেত , এভাবে আর কত দিন চলবে ? কিভাবে চলবে ? একের পর এক প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই যাচ্ছে ।

Leave a Reply