জেলা সিনার্জিতে কুটির শিল্প পুনরুদ্ধারের কথা বলা হলেও, সরকারি দৃষ্টি না পড়ায় ক্রমশ বিলুপ্তির পথে মাদুলি শিল্প

Social

মলয় দে নদীয়া:- মাদলের মতো দেখতে বলেই হয়তো নাম মাদুলি। বহু প্রাচীনকাল থেকেই দেশেবিদেশে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সম্পূর্ণ বিশ্বাসে ব্যবহৃত হয়ে আসছে মাদুলি। চোঙআকৃতির মাদুলির মধ্যে গাছগাছরা, ঔষধ নানা বিধ উপাদান থাকে। বিজ্ঞানমনস্ক বিভিন্ন সংস্থা প্রতিবাদ করে আসলেও বিশ্বাসে মেলায় বস্তু তর্কে বহুদূর এইরকমই লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ আজও মাদুলির উপর ভগবানের মতনই ভরসা করে থাকেন রোগমুক্তি থেকে মামলা মোকদ্দমা, ধন লাভ থেকে সন্তান লাভ, বিবাহ থেকে চাকুরী, দাম্পত্য কলহ থেকে পারিবারিক জটিল সমস্যা সব ক্ষেত্রেই।

বিজ্ঞানের অগ্রগতি এবং সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে মাদুলির ব্যবহার কিছুটা কমলেও, বর্তমান দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি অনুযায়ী মজুরি বাড়েনি এতোটুকু! বরং দীর্ঘ লকডাউনের মধ্যে শান্তিপুর এবং নদীয়ার শয়ে শয়ে মাদুলি শিল্পের কারিগর পরিবারের খোঁজ মেলেনি মালিকপক্ষ পাশে, দাঁড়ায়নি সরকার। অথচ সম্প্রতিক নদিয়ার কৃষ্ণনগর সিনার্জিতে কুটির শিল্প মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ সহ আরো চার মন্ত্রী জেলা সভাধিপতি এবং বেশ কিছু বিধায়ক বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিগণ এবং জেলা প্রশাসক ও তাদের আধিকারিকগ গুরুগম্ভীর জেলা শিল্প সম্বন্ধীয় আলোচনায় উঠে এসেছে এই শিল্পের পুনরুদ্ধার প্রসঙ্গ।
কিন্তু বেথুয়া হরিণঘাটা চাকদা নবদ্দীপ হোক বা শান্তিপুরে মাদুলি শিল্পের কারিগররা জানেন না কিছুই। শিল্পী কার্ড তো দূরে থাক ন্যূনতম কুটির শিল্পের বিভিন্ন মিটিংয়ে ডাক পাননা পর্যন্ত। তাদের কাছ থেকে জানা গেলো, মাদুলিতে পান দেওয়ার মসলার দাম বৃদ্ধি হয়েছে ব্যাপক, প্রতি হাজার মাদুলি তৈরি করে দিতে পারলে সাড়ে চারশো টাকা মেলে। যার মধ্যে মজুরি এবং অন্যান্য খরচ খরচা 300 টাকা লেগে যায় লাভ বলতে মাত্র দেড়শ টাকা। কিন্তু তবুও মজুরির সাথে সামান্য লাভ মিশিয়ে কোনরকমে চলে পরিবার। শান্তিপুর আমড়াতলা রামনগর পাড়া মামদো পাড়া নতুনহাট অঞ্চলের রবিন পাল তাপস পাল কাঞ্চন সিংহরা জানান বিকল্প কোন মায়ের ব্যবস্থা না থাকার কারণে এই কাজ ছেড়ে দেওয়ার উপায় নেই। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা নতুন করে কাজ শিখতে চান না, যাদের পূর্বপুরুষ এ কাজের সাথে যুক্ত ছিল তারাই একমাত্র ধরে রেখেছে এই শিল্প। তবে সংশয় প্রকাশ করে বলেন সরকারি দৃষ্টিপাত না থাকায় ক্রমশ অবলুপ্তির দিকে চলে যাচ্ছে এই শিল্প।

Leave a Reply