মলয় দে,নদীয়া :-বাঙালি কথায় কথায় বলে, আমে-দুধে মিলে গেলে আঁটি গড়াগড়ি খায়! নেহাতই তুচ্ছ, অবহেলার পাত্র হিসেবে আমের আঁটির প্রসঙ্গ তোলা হয়। কিন্তু জানেন কি, আমের আঁটির গুণও কিছু কম নয়! সম্প্রতি গবেষণায় এমনটাই দাবি বিশেষজ্ঞের। সাহিত্যেও আম আঁটির গুরুত্ব যথেষ্ট বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায় লিখে গেছেন বিখ্যাত আম আঁটির ভেঁপু।
একাধিক পরীক্ষায় প্রমাণিত, ১০০ গ্রাম আমের আঁটিতে রয়েছে ৬ গ্রাম প্রোটিন, ২০ গ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ৩২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেড, ৩ গ্রাম ডায়েটরি ফাইবার আর প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-৬ ও বি-১২। এ ছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যামাইনো অ্যাসিড, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। আসুন এ বার আমের আঁটির অজানা ৫টি আশ্চর্য স্বাস্থ্যগুণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক…
প্রথমে আমের আঁটি শুকিয়ে ভাল করে গুঁড়ো করে নিন। এ বার জেনে নিন আমের আঁটির গুঁড়োর আশ্চর্য স্বাস্থ্যগুণ।
খুশকির সমস্যায়, শুষ্ক ও রুক্ষ ত্বকে, ঝকঝকে দাঁত ও মজবুত মাড়ি, পতঙ্গ কামড়ে, আমের আঁটির জুড়ি মেলা ভার!উচ্চ কোলেস্টেরল রক্তচাপ ডায়াবেটিস এর মতন সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
তবে এতো গেলো উপকারিতার কথা। কিন্তু ইদানিং এই আঁটির উপরে ভরসা করে নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা বা সরকারি বিঘা র পর বিঘা জমি বনসৃজন এর কাজে অথবা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বনসৃজন এর প্রয়োজনীয়তায় একশ্রেণীর মানুষ ফেলে দেওয়া আঁটি থেকে সদ্য নির্গত হওয়া গাছ, জোগাড় করে অনায়াসে নিজের পরিবারের খরচ যোগাচ্ছেন, অন্যদিকে পরিবেশের সামঞ্জস্য রক্ষা করে চলেছেন।
নদিয়া আরংঘাটা, বীরনগর, ফুলিয়া অঞ্চলের এধরনের চার পাঁচ জন ব্যবসায়ীর অধীনে প্রায় দুই শতাধিক মানুষ নতুন কর্ম পেয়েছেন। অন্যদিকে গৃহস্থ পরিবারের ফেলে দেওয়া আঁটি থেকে উপার্জনের কথা কোনোদিনই ভাবতে পারেননি তারা, কিন্তু বেশ কয়েক বছর আগে থেকে সাইকেল ভ্যান রিকশা নিয়ে আঁটি কিনতে চলে আসে বাড়ির উপরে, গৃহিনীদের হাত খরচ হিসাবে কিছু লক্ষীর আমদানি হয় এ সময়!
তাহিরপুরের বাসিন্দা উৎপল মণ্ডল , জানান কাঁচামালের মতন যখন যে রকম দাম থাকে সেই অনুযায়ী কিনে থাকি আজকের বাজার দর, ৬০টাকা প্রতি ১০০ পিস চারার গত বছরে ১৪০টাকা পর্যন্ত দিতে পেরেছিলাম, কলমের আমের চারা তৈরির ক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে ধরনের গাছগুলি।
শংকর রায়, রবিদাস, বিনয় বিশ্বাসরা জানান, বিল্ডার্সের দোকান, প্যান্ডেলের কাজ, বা তাঁতের অবস্থা খারাপ হওয়ার পরেও কোনো রকমে দু’বেলা দু’মুঠো খাওয়ার যোগাড় করতে পারছি, শুধু আঁটির ব্যবসার কারণে। তবে দুশ্চিন্তা একটাই শুধু আষাঢ় মাস, তারপর কিভাবে চলবে?