মলয় দে, নদীয়া :- কেউ হতে চায় ডাক্তার কেউ বা ইঞ্জিনিয়ার! তবে নদীয়ার শান্তিপুর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সুত্রাগড় মুচিপাড়ার ৪৮ বছরের বুদ্ধদেব দাস পেশায় রাজমিস্ত্রি! নেশা ভাগ্য পরীক্ষা!
সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পরিশ্রমের অর্থে সংসার চালানোর পর উদ্বৃত্ত কুড়ি ৫০ টাকা ১০০ টাকা তিনি ব্যয় করতেন লটারির টিকিট কেটে! সংসারে নানান অশান্তিও হয়েছে এই টিকিট কে কেন্দ্র করে, তবে বুদ্ধদেব বাবুর সাফ কথা, বিয়ে পাঠরত ছেলে, নবম শ্রেণীতে পড়া মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে পরিবারে কোন ঘাটতি হতে দেননি নেশার কারণেও! তবে জূয়া সাট্টাকে ঘৃণা করেন তিনি, লটারি কে বলেন ভাগ্য পরীক্ষার পন্থা। যুক্তি হিসেবে বিভিন্ন রাজ্য সরকার পরিচালিত লটারি টিকিট বিক্রির উদাহরণ দেন।
গত ৪ঠা জুলাই রবিবার অন্য আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতন রাজমিস্ত্রি কাজ করছিলেন বাড়ির পাশেই, স্থানীয় যে দোকান থেকে তিনি টিকিট কিনেছিলেনন সে এসে বলে যান, “ভাগ্য খুলেছে আবারো, এবার এক কোটি টাকা”, তাতেও হেলদোল নেই বুদ্ধদেব বাবুর। তিনি বিকালে ছুটির পর স্নান, খাওয়া-দাওয়া করে সন্ধের সময় দেখা করেন ওই দোকানে।
বুদ্ধদেব বাবু জানান, ১৯৮০ সালে ছাত্র অবস্থা থেকেই লটারি টিকিট কাটি, মাঝেমধ্যেই ২০, ৩০, ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেয়েছি! প্রাপ্ত অর্থ আবার টিকিট কাটার কাজে লাগাতাম, জেদ ছিল প্রথম পুরস্কার পাওয়ার। গত বছরেও রথের আগের দিন পেয়েছিলাম আড়াই লক্ষ টাকা, এ বছরেও রথের আগে হলো স্বপ্নপূরণ! এক কোটি টাকা শোনা গেলেও প্রকৃতপক্ষে হাতে পেয়েছি ৭২ লক্ষ টাকা। তাই পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ১ লক্ষ টাকা দান করার ইচ্ছা আছে।
শখ বলতে, বিভিন্ন তীর্থস্থান ঘুরতে যাবো পরিবারসহ, ছেলে সমাজ সেবা করতে দু পাঁচশো টাকার জন্য আমার উপার্জনের অপেক্ষায় থাকত! এখন থেকে ওর মাধ্যমে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। তবে আশা পূরণ হয়ে গেছে !এখন আর, টিকিট কাটার নেশা নেই ।
স্ত্রী জানান, অভাবী পরিবারে কখনোই উচিত নয় লটারির টিকিট কাটা।