জনপ্রিয় খাবার আমসত্ত্ব ! নদীয়ার এই এলাকায় ঘরে ঘরে মহিলারা আজও প্রস্তুত করেন আমসত্ত্ব

News

মলয় দে, নদীয়া :- যে আম অত্যাধিক উৎপাদনের কারণে বাজারে অধিক যোগানের ফলে ৫টাকা কেজি দরেও বিকোচ্ছে না! গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করার পরও ফেলে দিতে হচ্ছে। দোফলা আম সারা বছর পাওয়া গেলেও সেই আমই এক দু মাস আগে মধ্যবিত্ত পরিবারের একটি কেটে পরিবারের সকল সদস্যরা ভাগ করে খেতে হয়েছে দামের কারণে! আর দু-তিন মাস বাদেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়! সরকারি সংরক্ষণের খুব বেশি পরিকাঠামো না থাকলেও, যুগ-যুগান্ত ধরে বাড়ির মহিলারাই কাঁচা আমের আম তেল, আমচুর, আম কাসুন্দি,আমসি নানাভাবে সংরক্ষিত করে রাখেন সারা বছরের উদ্দেশ্যে! পাকা আমও তাদের হাত থেকে নিস্তার পায়না! সংসারের নানা কাজে ব্যস্ততার মধ্যেও, হনুমানের উপদ্রব ঠেকিয়ে, মাছি তাড়িয়ে, রৌদ্রের সাথে মিতালী করে মেঘ বৃষ্টির সাথে লড়াই করে প্রিয়জনদের উপহার দেবার উদ্দেশ্যে আমসত্ত্ব প্রস্তুত করে থাকেন। আম প্রিয় আম আদমি, সারাবছর আমের স্বাদের সংস্পর্শে থাকে এভাবেই।

অনেকেরই হয়তো মনে আছে ছোটবেলায় দিদা ঠাকুরমার ভালোবাসার অন্যতম উপহার ছিলো আমসত্ত্ব!

“আমসত্ত্ব দুধে ফেলি, তাহাতে কদলী দলি!” কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কবিতার লাইনও অমরত্ব লাভ করেছে একই সাথে। ফাস্টফুড প্রিয় এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা, কাঁঠাল, আতা, ফুটি, আঁশ ফল ,জাম, দেশিখেজুর, তালশাঁস না না ফলে অরুচি থাকলেও আমভক্ত প্রায় সকলেই।

নদীয়ার শান্তিপুর করমচাপুর গ্রামে সেখানে প্রতি বাড়িতেই উৎসবের চেহারা নিয়েছে আমকে কেন্দ্র করে, অনেকেই জানান শুধু দূরের আত্মীয়-স্বজন নয়! করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেই আসতে পারেননি বাগানে! তাই তাদের প্রত্যেকে পাঠাতে হবে আমসত্ত্ব এবং কাঁচা আমের অন্যান্য উপকরণ।

তবে এ বছর, অত্যাধিক আমের ফলন হওয়া সত্ত্বেও , বর্ষার কারণে শুকানোর অসুবিধা হচ্ছে, রং হয়ে যাচ্ছে কালো। টানা রোদে শুকাতে পারলে, কাপড় ,কুলো, থালায় দেওয়া আমসত্ত্ব, সোনার মত চকচক করে। আমের রস প্রতিদিন স্তরীভূত করতে করতে, মোটা হয়ে এমনিতেই উঠে যায়! তবে বর্ষা বাদলের ভয়ে পাকা আমের রস আগুনে জ্বাল দিয়েও আমসত্ত্ব প্রস্তুত করছেন তারা নিরুপায় হয়ে।

Leave a Reply