মলয় দে, নদীয়া:- নবদ্বীপের দোল পূর্ণিমার নাম গৌর পূর্ণিমা। হেঁটেই ৭২ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করা। নিয়ম মেনে প্রতি বছর দোল উৎসবের আগে এই পথ পরিক্রমায় সামিল হন গৌড় ভক্তবৃন্দরা। এবারও গত রবিবার থেকে শুরু হয়েছে এই যাত্রা। সাতদিন ধরে টানা চলবে এই মণ্ডল পরিক্রমা। পদযাত্রায় অংশ নিয়েছে দেশি-বিদেশি মোট হাজার ৫ হাজার ভক্ত। সন্ন্যাস গ্রহণের আগে নবদ্বীপের যেসব জায়গায় নিমাই অর্থাৎ শ্রীচৈতন্যদেবের যাতায়াত ছিল, সেই সমস্ত জায়গায় সংকীর্তন সহযোগে পরিক্রমার মধ্যে দিয়ে নবদ্বীপে দোল উৎসব উদযাপিত হচ্ছে। কারণ একটাই, নবদ্বীপ-মায়াপুরের দোল যত না শ্রীকৃষ্ণের, তার থেকে অনেক বেশি শ্রীচৈতন্যদেবের। তাঁর আবির্ভাব তিথি পালনই হল এখানকার দোলের মূল আকর্ষণ। দোলের আগে সাতদিন, পাঁচদিন বা তিনদিন ধরে চলে পরিক্রমা। নিতান্তই পথ হাঁটতে কেউ অক্ষম হলে অন্তত একটি দিন – চৈতন্যধাম নবদ্বীপের ভগ্ন দেউল, নদীর পাড়, প্রান্তর, পাড়া গাঁ ছুঁয়ে যাওয়ার রীতিও আছে।
নবদ্বীপ মণ্ডল পরিক্রমা করতেই দোলে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন হাজার হাজার ভক্ত। তবে এবারে করোনা মহামারীর কারণে খুবই কম সংখ্যক ভক্ত এসেছে এবারে নবদ্বীপের ঐতিহ্যবাহী দোল উৎসবে। হাজার হাজার ভক্তদের জলখাবার, দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারের যাবতীয় রান্না করা হচ্ছে এই কেশবজি গৌড়ীয় মঠে। জানা গিয়েছে, সকালের জলখাবারে সাধারণত ফল, খিচুড়ি, চপ, চাউমিন, ফ্রুটজুস, বেলের সরবত থাকছে। সকাল ন’টা থেকে দশটার মধ্যে জলখাবার। মধ্যাহ্নভোজন দুটো থেকে তিনটের মধ্যে। তাতে ডাল-ভাত, সবজি, নানারকম নিরামিষ পদ, পায়েস, মিষ্টি ও একটা ফল থাকে। রাতে হালকা খাবার – শুধু মুড়ি আর দুধ।
তবে হিন্দিবলয়ের ভক্তদের জন্য ভাতের বদলে মেনুতে থাকছে চাপাটি।সাতদিন ধরে নবদ্বীপের ন’টি দ্বীপ পরিক্রমা করা হবে। পরিক্রমা উপলক্ষে দেশি-বিদেশি ভক্তের সমাগমে সরগরম নবদ্বীপ শহর। কেশবজি গৌড়ীয় মঠের মহারাজ বলেন, সংলগ্ন এলাকার যেসব জায়গায় চৈতন্যদেব তাঁর প্রাক সন্ন্যাস পর্বে লীলা করেছেন, পরিক্রমায় সেই সব স্থানেই ভক্তরা যান। নবদ্বীপের দেবানন্দ গৌড়ীয় মঠ এবং কেশবজি গৌড়ীয় মঠ থেকে বের হচ্ছে বিরাট পরিক্রমা।