নিউজ সোশ্যাল বার্তা : ১৭৪০-১৭৫০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে বর্গিরা ক্ষীরপাই শহর একাধিক বার আক্রমণ করে। বর্গিদের আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে এলাকা ছাড়তে শুরু করেন স্থানীয়রা। সেই সময় এডওয়ার্ড বাবরশ নামে এক সাহেব বর্গিদের বিতাড়িত করেন। ফলত স্বস্তি ফিরেছিল ক্ষীরপাইয়ে। বর্গি বিতাড়নের পর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ স্থানীয় এক মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী ‘বাবরশা’ নামে একটি মিষ্টান্ন তৈরি করে সাহেবকে উপহার দিয়েছিলেন। সেই থেকেই শহরের মানুষের পছন্দের মিষ্টির তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাবরসা। আবার কেউকেউ বলেন, ক্ষীরপাই থেকে নিয়ে গিয়ে এই মিষ্টান্ন নাকি দিল্লিতে মোগল সম্রাট বাবরকে খাওয়ানো হয়েছিল । সেই থেকেই এর নাম বাবরশা। বাবরসা বর্তমান দ্রব্যমূল্য প্রতি পিচ ৬ টাকা থেকে ১০ টাকা।
সাধারণত ময়দার সাথে দুধ, গাওয়া ঘি মিশিয়ে এক সাদা মিশ্রণ তৈরী করা হয়, যা কড়াইতে তেলে রাখা এক বিশেষ ছাঁচের মধ্যে ধীরে ধীরে ফেলে চরকির মতো ছড়ানো আকারের বানানো হয়। তারপর এটিকে রসে ডুবিয়ে রস ছড়িয়ে,তাতে ভিজিয়ে খাওয়া হয় । প্রায় ২৫০ বছরের সুগর্বের ইতিহাস সমন্বিত এই মিষ্টি আজকে প্রায় বিলুপ্তির পথে।
এই মিষ্টি তৈরীর জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির সাথে তাল মেলাতে এর দাম বাড়ার জন্যে বিক্রি এবং চাহিদা উভয়ই কমেছে।কিন্তু খরচের সাথে সঙ্গতি রাখতে এর থেকে কম দামেও বিক্রি করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।তাছাড়া প্রচারের অভাবে ব্যবসার প্রসার ও কমছে। এতদিন যেই কারিগর রা এই মিষ্টি বানানোর সাথে যুক্ত ছিলেন তারাও বেশি লাভের আশায় অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন, কারণ সারাদিন পরিশ্রম করে যে পারিশ্রমিক মেলে তা দিয়ে সংসার চালানো যায় না এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্ম ও এই কাজে আগ্রহী নয় বলে জানা গেলো।বার জিআই ট্যাগ এর স্বীকৃতি চাইছে ‘বাবরশা’। ক্ষীরপাইয়ের এই প্রসিদ্ধ মিষ্টান্নের কদর ছিল রাজ্য ছাড়িয়ে ভিনরাজ্যেও। ক্ষীরপাইয়ের সঙ্গে বাবরশার নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই মিষ্টান্নই ক্ষীরপাইকে রাজ্য ছাড়িয়ে ভিনরাজ্যেও পরিচিত এনে দেয়। এখন ক্ষীরপাইয়ের সর্বস্তরের মানুষ চাইছেন তাঁদের আদরের বাবরশা পাক জিআই তকমা।তবে দেশ জুড়ে প্রচার,বিক্রি বাড়বে,চাহিদা তৈরী হলে উৎপাদন, বিক্রি সব ই বাড়বে, লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি হবে।
প্রবীণ মিষ্টান্ন বিক্রেতাদের মতে বাবরশার জিআই স্বীকৃতি পেতে সর্বস্তরের উদ্যোগ নেওয়া উচিত, সেইসঙ্গে বাবরশা শিল্পকে বাঁচাতে সরকারে ও সর্বাত্মক উদ্যোগ নেওয়াও দরকার,দরকার সাহায্য,
তবেই বাঁচানো সম্ভব হবে আমাদের এই ঐতিহ্য কে।
Facebook:News Social Barta 24×7