দেবু সিংহ, মালদা: এক অনাথ পরিবারের পাশে ত্রাতা হয়ে দাঁড়িয়ে মেয়ের দিল তারাশঙ্কর চ্যারিটির সদস্যরা। এই ঘটনায় ওই সদস্যদের যুবকদের বিভিন্ন মহল থেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক চিলতে বাড়িতে ওই পরিবারের বাস। মাত্র ১৫ কাঠা জমির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে সংসার। তাও ওই একমাত্র সম্বল ওই ১৫ কাঠা জমি ৩৫ হাজার টাকায় বন্ধক দিয়ে বিয়ের আয়োজন করবেন বলে স্থির করেন মা তুলো ওরাওঁ। বাবা নীরেন ওরাওঁ বছর সাতের আগে অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার পর থেকে অসহায় ওই পরিবার। এরই মধ্যে বিয়ের খবর যায় এলাকার যুবকদের কাছে। হাতে মাত্র ৩ দিন। ত্রাতা হয়ে ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ান তাঁরা। বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদা তুলে বিয়ের আয়োজন করলেন। এমনকী বন্ধকের ৩৫ হাজার টাকাতেও হাত দিতে হয়নি পরিবারকে। চার হাত এক হয়ে যাওয়ার পর ওই যুবকদের আশীর্বাদ করেন মা। এমনকী ওই যুবকদের শুভেচ্ছা জানান এলাকার বাসিন্দারাও।
ঘটনাটি মালদার হবিবপুর থানার শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জগন্নাথপুর এলাকার ঘটনা। সোমবার বিদায় পর্বে এলাকার দাদাদের কাছে আনন্দাশ্রুতে শুভেচ্ছা জানালেন পাত্রী প্রতিমা। পাত্র সঞ্জিত ওরাওঁ। বামনগোলা থানার পাকুয়াহাটের আইলাচোরা এলাকার বাসিন্দা। পেশায় মজুর তিনি। সোমবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের বিয়ে হয়ে যায়। সদস্যরা সকাল থেকে যাবতীয় বিয়ের আয়োজন করেন। রাতে প্রায় ৭০০ মানুষকে পাত পেরে খাওয়ান তাঁরা। বরযাত্রীই ছিলেন প্রায় ৩০০ জন। যুবকেরা নিজেরাই পরিবেশন করে আপ্যায়ন করেন অতিথিদের। পদ ছিল ভাত, পাপড়, ডাল, মেশানো সবজি, বাঁধা কপির তরকারি, মাছ, চাটনি ও মিষ্টি। চ্যারিটির কর্ণধার তারাশঙ্কর রায় বলেন, ‘আমাদের কাছে মাত্র ৩ দিন আগে খবর আসে ওই পরিবারের বিয়ের কথা। এমনকী শেষ সম্বলটুকু বন্ধক দেওয়ার কথা শুনে আমরা আর স্থির থাকতে পারি না। পাড়ার বোনের বিয়ের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিই। এদিক-ওদিক থেকে চাঁদা তুলে বিয়ের আয়োজন করি।’