মলয় দে, নদীয়া :- ১৮৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত, শান্তিপুর তো বটেই নদীয়া জেলার মধ্যে অন্যতম শান্তিপুর মিউনিসিপ্যাল উচ্চ বিদ্যালয়। বিগত বছরগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকবার পড়াশোনা, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক সহ বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যের মুখ হয়ে উঠতে দেখা গেছে এই বিদ্যালয়কে। এই বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা লাভ করে, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর সামলানো, দেশের ও রাজ্যের মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালানোর মত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও দেখা গেছে তাদের। যার মধ্যে অনেকেই থাকেন বিদেশে! সোশ্যাল মিডিয়ায় শৈশব হারানো স্মৃতিচারণের ফলে বেড়েছে আন্তরিকতা! ছোটবেলায় স্কুলের সেই ঘর বেঞ্চ আজও হাতছানি দেয় সংসারের দায়িত্ববোধে উপার্জনের উদ্দেশ্যে বিদেশ যাওয়া অথবা বিভিন্ন বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা মানুষগুলোকে। সেই কারণেই ২০১৮ সালে তৈরি হয়েছিল প্রাক্তনী সমাজ! শুধু আবেগ নয়! স্কুলের বিদ্যালয়ের মাঠ রক্ষণাবেক্ষণ! ভেঙে যাওয়া প্রধান গেট পুনর্নির্মাণের মতো বেশ কিছু বড় কাজও সাধিত হয়েছে তাদের দ্বারা। নিজেদের বিদ্যালয়ের গৌরবান্বিত ইতিহাস জনসমক্ষে তুলে ধরা, এবং তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার কর্তব্য ও দায়িত্ব তাদের নিজেদের বলেই মনে করেন প্রত্যেকে।
আজ সেই ফেলে আসা শৈশবে বন্ধুত্বের একাত্মা হওয়ার দিন! টেবিলে মাধ্যমিকের সাল উল্লেখ করে বন্ধুরা সব খুশিতে মেতেছেন। অত্যন্ত দুরন্ত বন্ধুটিও আজ শান্ত! অভাবের তাড়নায় তাঁত শ্রমিক হিসেবে কাজ করা বন্ধুত্ব স্থান পেয়েছে পাশের চেয়ারে বসা সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলানো অফিসের বড়বাবুর। কর্মব্যস্ততা চাপে বহুদিন খোঁজখবর নেওয়া হয়নি, বন্ধুর বর্তমান পেশার স্বচ্ছলতা প্রসঙ্গে! দুপুরের মধ্যাহ্নভোজের খাবার থালায় ছোঁ মারা, হার মানাতে পারেনি সেদিনের আলু কাবলি ছোলা অথবা আচারের শালপাতার ঠোঙ্গার মতো!
সারাদিন তাদের কবিতা গান আবৃত্তি বিভিন্ন সালের স্মৃতি, আগামীর পরিকল্পনা উঠে আসলো বক্তৃতায়। বেলা শেষে বাড়ি ফেরার সময়! সেই ঘরটার দিকে উঁকি সকলেই! যেখানে বসা নিয়ে প্রায়ই লেগে থাকতো খুনসুটি! কালের নিয়মে হয়তো সেই বেসগুলো তাই এখন বসে তাদের বর্তমান প্রজন্ম! কিন্তু সেই বন্ধুত্ব কি আছে আজও ? হয়তো বা তারাও একদিন সদস্য হবে প্রাক্তনী সমাজের! স্মৃতিচারণা করবে আজকের মত! কিন্তু ফিরে আসবে কি?শ্রদ্ধার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পায়ে প্রণাম করে বুকে জড়িয়ে ধরার সময় গায়ের গন্ধ আগামীতেও চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারবে কি শিক্ষকের নাম ! পথচলতি শিক্ষকের পায়ে মাথা ঝুঁকিয়ে প্রণাম করতে! হয়তো সময় বলবে.. তবে প্রাক্তন সমাজে বছরে একদিন বসে অন্তত ভাববে এ প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীরা! তাই চিন্তা করার ফুরসতের কারণে একদিনের জন্য হলেও বেঁচে থাকুক সমাজ!