মলয় দে, নদীয়া : শীতকালীন সময়ে অন্যতম আকর্ষণ ফুলের বাগান । অনেকেই চিত্ত বিনোদনের জন্য বা গৃহ সৌন্দর্য রূপায়ণের তাগিদে নিজের বাড়ির উঠানে বা ছাদে আবার কেউ উদ্যানে ফুটিয়ে তোলেন মনোরম পুষ্প । ঠিক সেই রকমই নদীয়া জেলার শান্তিপুর সুত্রাগর গোপী নন্দী লেন নিবাসী এবং বর্তমানে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট এর অবসর প্রাপ্ত কর্মী অরুণ প্রামাণিক সম্পূর্ণ ব্যাক্তিগত উদ্যোগ ও পরিচর্যার মাধ্যমে প্রায় পনেরো থেকে কুড়ি রকম প্রজাতির মনোরম পুষ্পের পরিস্ফুটন ঘটিয়ে সাধারণকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন ।
এখানে যে সকল পুষ্পের বর্ণাঢ্য সমাবেশ প্রতক্ষ্য করা যাচ্ছে সেগুলি হলো ইনকা গাঁদা , রেড ব্রকেট , ডালিয়া , অস্টার , স্টক, চন্দ্র মল্লিকা , পমপম , ইম্প্রেশন, জারবেরা , সালভিয়া, ক্যালেন্দুলা , গ্যালে ডিয়াম, প্যাঞ্জি, ববিডল, অ্যান্টি নাম , পপি, ক্যাকটাস, জ্যাক প্রভা, খই ফুল, পিটুনিয়া ইত্যাদি ।
সুপ্রাচীন কাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ঈশ্বরের পুজো থেকে বিবাহ , বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান , যাগ যজ্ঞ এবং মানুষের অন্তিম যাত্রা ও অন্তেষ্টি ক্রিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন কার্য কলাপের সাক্ষী এই মনোরম বিকশিত পুষ্প । পাহাড় , নদ নদী , পার্বত্য হিমবাহ প্রভৃতির মত ন প্রকৃতির অন্তহীন সৌন্দর্য্য বর্ধনকারী এই মনোরম পুষ্প আমাদের চিত্ত হরণ করে পাড়ি দেয় এক সুদূর অজানা কল্পলোকে । একঝাঁক বর্ণাঢ্য পুষ্প আমাদেরকে স্মরণ করায় রবি ঠাকুরের গান ” ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে বহে কি বা মৃদু বায় ” আবার হৃদ্রয় থেকে আপন খেয়ালে ভেসে আসে ” ফুল আমি ধন্য মাটির পরে ” , মনে পড়ে যায় সেই রুপোলি পর্দায় অভিনীত নেপথ্যে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কালজয়ী সেই গান ” ফুলেশ্বরী ফুলেশ্বরী ফুলের মত নাম ” , এবং সর্বোপরি যে গানটিকে স্মরণ না করলেই নয় , সেটা হলো দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ” পুষ্পে পুষ্পে ভরা শাখি , কুঞ্জে কুঞ্জে গাহে পাখি , গুঞ্জরিয়া আসে অলি পুঞ্জে পুঞ্জে ধেয়ে , তারা ফুলের ওপর ঘুমিয়ে পড়ে ফুলের মধু খেয়ে ” ,
কিন্তু ওরা ফুলের মধু খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লেও ফুল ফোটাতে হবে আমাদের প্রত্যেকের ! বিশ্ব প্রকৃতি ও অরন্য কেও সংরক্ষণ করতে হবে । গড়ে তুলতে হবে হিংসামুক্ত পৃথিবী , যেটা হবে বিশ্বসভ্যতা ধ্বংসের পরিপূরক ও শান্তির বার্তা বাহক । একটি প্রস্ফুটিত ফুলের সৌন্দর্য বা সৌগন্ধই আরে মানসিক সুস্থতা দান করতে।