মলয় দে নদীয়া :-নদীয়ার করিমপুর থানার পাড়ার ৫ দিনের নবজাতক ছোট্ট সাকিব এর জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দিলে ভর্তি করা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে। সাকিবের শরীরের অবনতি ঘটলে, আইসিইউ তে নিয়ে যান চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা সাকিবের পরিবার’কে জানান সাকিবের রক্তের প্রয়োজন অতি শীঘ্রই সাকিবের জন্য এক ইউনিট রক্ত যোগাড় করতে হবে নইলে সাকিব’কে বাঁচানো যাবে না।
সাকিবের রক্তের গ্রুপ ও (নেগেটিভ) শুনে পরিবার অতটা বুঝতে না পারলেও পরিজন বন্ধু আত্মীয় স্বজনরা যারা রক্ত নিয়ে একটু-আধটু কাজ করেন তারা বুঝেছিলেন করোনা পরিস্থিতিতে ব্লাড ব্যাঙ্ক গুলোতে পজিটিভ রক্তের কেমন হাহাকার সেখানে নেগেটিভ রক্তের কি অবস্থা সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না!
ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে সাকিবের পরিবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং সারাদিন হয়রানি হয়ে খোঁজাখুঁজির পরেও ওনারা রক্ত যোগাড় করতে পারেননি।
এরপর একজন সহৃদয় ব্যক্তির মাধ্যমে ওনারা ইবিএস এর কথা জানতে পারেন এবং ওনারা এই সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ। ইবিএস পরিবার পূর্ণ শক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ১০ মিনিটের মধ্যে ইবিএস এর ডাকে সাড়া দেন নদীয়ার পলাশীর শুভেন্দু ঘোষ । অসময়ে রক্ত পেয়ে খুশি বাড়ির লোকেরাও । পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানানো হয় শুভেন্দু ঘোষকে।
এরপর সন্ধ্যা ৭ঃ৩০ নাগাদ শুভেন্দু ঘোষকে পলাশি থেকে ইবিএস এর সদস্যরা নিয়ে যায় মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে । রাত্রি ৯ টা নাগাদ সাকিবের পরিবারের হাতে রক্ত তুলে দিয়ে ফিরে আসে তাদের যোদ্ধারা। সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা যায় সাকিব এখন সম্পূর্ণ সুস্থ, বিপদমুক্ত।
এভাবেই শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ার উপর ভর করে ক্রমশ সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছে এমার্জেন্সি ব্লাড সার্ভিস। ফেসবুকে প্রায় দশহাজার সমর্থকদের কাছ থেকে সাহায্য এবং সহযোগিতায় নিভৃতে রক্তার্পণের শপথ নেওয়া সদস্যরা রাতের অন্ধকারেও , রোগীর পাশে। চিন্তা করবেন না, আমরা আছি তো!
এ প্রসঙ্গে সংগঠনের সভাপতি ওসমান গনি খান জানান ” সারা বছর ধরেই চলে আমাদের এই সেবাকাজ । সাধারণ মানুষের জন্য ইবিএসের সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন । সবার কাছে রক্তদান করার জন্য আহ্বান জানাই।”
এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু ঘোষ জানান “এটা তেমন কিছু নয় ,আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র “।