মলয় দে, নদীয়া:-কিছুদিন আগে, ভাইপোর বায়না মেটাতে স্বল্প রোজগেরে কাকা সঞ্জয় প্রামাণিক ফেলে দেওয়া উপকরণ থেকে গাড়ি বানিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলো নেট দুনিয়ায়! পুঁথিগত বিদ্যা না থাকলেও সেই সঞ্জয় বাবুর ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পকর্ম উঠে এসেছিলো সংবাদমাধ্যমে! এবার আপনাদের কাছে তুলে ধরব সঞ্জয় বাবু ভাস্কর্য শিল্পী হয়ে ওঠার কাহিনী। নদীয়া জেলার শান্তিপুর বৈষ্ণব পাড়ার তার নিজস্ব বাড়িতে অশ্বত্থ, বট, জাম নানান গাছের বনসাইয়ের পরিচর্যা শিখেছেন বাবার কাছ থেকে। পেশায় প্যান্ডেল কর্মী হওয়ার কারণে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াতে হয় তাকে। হয়তো শিল্পী স্রষ্টা থাকার কারণেই, বিভিন্ন উপরে যাওয়া গাছের শেকড়ে বিভিন্ন আকৃতি খুঁজে পান তিনি। প্রতিদিন নিয়মিত গঙ্গা স্নানে যাবার সময়, গঙ্গার পাড়ে ভাঙ্গনের মাঝে ছোট-বড়-মাঝারি নানা গাছের শিকড়ে শিল্পত্ব খুঁজে পান তিনি, সেগুলো সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে এসে কাজের অবসরে একটু ঘসা মাজা করে রূপ দেন অসাধারণ শিল্পকর্মে। আইলা ঝড়, ফনি, আমপান নানা সর্বনেশে ঝড়ে উল্টে পড়া গাছের শেখর নিদর্শন শোভা পায় তার সংগ্রহে। সমাজের নানা কুব্যাধি, হারিয়ে যাওয়া ডাইনোসর, লুপ্তপ্রায় কচ্ছপ, পাখির বাসা, জিরাফের লম্বা গলা হওয়ার কাহিনী, হরিণ-হরিণী, নানা ভাস্কর্যের নিদর্শন দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। আম্ফান ঝড়ের ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভগ্ননিম গাছ দিয়ে অসাধারণ রাধার অবয়ব তৈরি করেছেন তিনি। পুরনো বই জোগাড় করেন ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে, ভ্রমণের বই ভীষণ ভালোবাসেন তিনি!
তবে তুলসী কাঠের উপর ১৬ নাম ৩২ অক্ষর হরি নামাঙ্কিত কাঠের মালা পাওয়া যায় তার কাছে। এ বাদেও তুত ফল, কুঁচ ফল, রুদ্রাক্ষ ফল, সহ নানা লুপ্তপ্রায় ফল মূল্যবান রত্নের মতো সুরক্ষিত আছে তার সংগ্রহে।