মলয় দে, নদীয়া:- আর পাঁচজন, সাধারণ চাষির মতই তুলসী মাহাতো প্রভাস মাহাতো, লেখক কবি সুবীর দাস, নাট্যকর্মী সুস্মিতা বিশ্বাস সুদীপ দাস সহ বেশ কিছু মানুষ চর মাহাতো পাড়ার নদী প্রান্তিক এবং শান্তিপুরের প্রবাদপ্রতিম সঙ্গীতশিল্পী ভবেশ মাহাতোর নেতৃত্বে গঙ্গা ভাঙ্গনের কারণ এবং তার প্রতিকারে বেরিয়ে পড়লেন সোমবার! শান্তিপুর বড়বাজার ফেরিঘাট থেকে সকাল দশটা নাগাদ গভট চর বয়রা স্টিমার ঘাট সাড়াগড় শক্তিপুর ঘুরে দেখলেন তারা! ভাগ্নের অভিমুখ খুঁজে বের করলেন! সাবেকি পদ্ধতিতে জলের নাব্যতা মাপলেন ফিতে দিয়ে। নৌকার মধ্যে গান , আবৃত্তি , নাটকের মাধ্যমে প্রতিবাদে সরব হলেন তাঁরা।
প্রশ্ন উঠতেই পারে! প্রযুক্তিবিদ্যার সম্পর্কে কতটুকু বোঝেন তারা? এ প্রসঙ্গে তারা জানান, নদীর পাড়ে বড় হয়ে, বুড়ো হয়ে যেতে চললাম! নদীগর্ভে বিঘের পর বিঘে বিলীন হয়েছে, অন্নদাতা চাষের জমি, মাতৃসম নদীর গতি প্রকৃতি, খেয়াল খুশি সবটাই আমাদের রক্তে। খোদার উপর খোদকারী করতে গিয়ে যত বিপত্তি! ফারাক্কার মতো চলমান নদী প্রবাহর স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ করলে ফল ,তো ভুগতেই হবে! বছরের পর বছর ড্রেজিং না করে শুধুমাত্র পাড় বাঁধালে লাভ কি! গুপ্তিপাড়ার একটি ইটভাটা ক্রমশ এগিয়ে আসছে, গঙ্গা গর্ভে ভাঙ্গা ইঁটের টুকরো ফেলে, বিভিন্ন শহর-গ্রামের জল নিয়মিত পড়ছে গঙ্গায়, বাড়ছে পলির পরিমাণ। এর আগেও গঙ্গা বাঁধানোর প্রযুক্তিবিদদের বোঝানোর চেষ্টা হয়েছিলো পাড় বাঁধাতে গেলে, জমির ভূমিরূপ বিবেচনা করে নিচ থেকে বাধন দিতে হয়, শুধুমাত্র পাড়ে কিছু বালির বস্তা ফেলে এত বড় প্রকাণ্ড নদীর ক্ষত পূরণ হয়না! পর্যবেক্ষকরা জানান, জানি আমাদের কথা পৌছাবেনা প্রযুক্তিবিদদের কানে, তবুও ছোটবেলায় গঙ্গা মায়ের রূপের এত অবনতি দেখে, হাজার হাজার কৃষকের কর্মহীনতা লক্ষ্য করে, ঘরে চুপ করে থাকতে পারিনি! তাই আজকের মৃদু প্রতিবাদ হয়তো, সর্বশান্ত হওয়ার পর অমৃতসময লাগবে একদিন।