মলয় দে, নদীয়া:- নদীয়া জেলার হবিবপুর এলাকার রাঘবপুরের বাসিন্দা, কুমারেশ বিশ্বাস ছোট থেকেই বাবা কাকার সাথে, নদী সমুদ্রে পাড়ি দিতেন, ফিরে আসতেন পনেরো কুড়ি দিন বাদে! বাবা কাকার বয়স হওয়ার পর থেকে তিনি এই কাজে বহাল ছিলেন অন্য মৎস্য ব্যবসায়ীরা বেতনভোগী কর্মচারী হিসেবে। মনে সুপ্ত বাসনা ছিলো, নিজে একটি ট্রলার বানাবেন! সম্পূর্ণ নিজস্ব স্বাধীনতায় বাবা কা কার মুখে হাসি ফোটাবেন। আজ সেই সুদিন! নদীয়ার শান্তিপুরে গবারচড়ে কাকা অজিত বিশ্বাসের বাড়ি , একেবারে নদীর তীরে। তাই সেখানেই সুদক্ষ মিস্ত্রী লক্ষণ এবং সফরন বালা কে দুমাস নিয়মিত দৈনিক মজুরি দিয়ে, বিভিন্ন কাঠের সমাহারে তৈরি করিয়েছেন, শখের ট্রলার! রোজগারেরও বটে! কুমারেশ বাবুর মতে সাত-আট লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই ট্রলার ৮-১০ টি মৎস্যজীবী পরিবারের রুজিরুটি যোগাবে।
মিস্ত্রি লক্ষণ এবং সফরন বালা জানান তাদের দীঘা শঙ্করপুর ফ্রেজারগঞ্জ কাকদ্বীপ নামখানা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন নদী তীরবর্তী এলাকায় তাদের ডাক পড়ে সুদক্ষ মিস্ত্রী হিসেবে। পড়াশোনা না জানলেও পূর্বপুরুষ থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা, অভিজ্ঞতায় অপরূপ সৌন্দর্য এবং নিপুণ দক্ষতায় তাদের মনে রাখেন সকলেই।
আজ সকাল দশটা নাগাদ, শান্তিপুর গবার চর এলাকায় এই উপলক্ষে, উৎসবের রূপ নিয়েছে। গঙ্গাবক্ষে নতুন চলার এর উপর পুজো অর্চনা করছেন ব্রাহ্মণ সহ এলাকার মহিলারা। অল্প বয়সী যুবক যুবতীরা মেতেছেন, খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণে! বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের অনভিজ্ঞতা বসত কালারটি কে জলে নামাতে গিয়ে, সাময়িক কিছুক্ষণের জন্য উল্টে গেলেও, সকলের প্রচেষ্টায় সামলে নেন এলাকার মৎস্যজীবীরা। তারপর শুভ যাত্রা শুরু হয় এই ট্রলারের। নিচে উপরে তিন স্তর বিশিষ্ট, প্রকোষ্ঠ আছে। যার একেবারে তলায় থাকে, জল অর্থাৎ মাছ ধরে রাখার জন্য। দ্বিতীয় তলে জাল বা মাছ ধরার অন্যান্য সামগ্রী সহ মৎস্য ব্যবসায়ীদের থাকার জায়গা! আর একেবারে উপরে তলে, জাল শুকোতে দেওয়া বা উপর থেকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।