মলয় দে, নদীয়া :- লজ্জার শুরুটা হয়েছিল গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০২০ থেকেই, ঠিক তার আগের বছর পুলওয়ামায় ৪০ জন বীর শহীদের স্মৃতি ম্লান হয়েছিলো, নেটদুনিয়ায় ভ্যালেন্টাইন্সের আবেগে। এরপর শুধু বিয়োগের পালা! যার মধ্যে প্রথমেই জানিয়ে রাখি এই বিশ্বে মোট ৬০ জন সাংবাদিক বন্ধুকে হারিয়েছি আমরা!
• বীরভূমের শান্তশিষ্ট পল্টু থেকে ভারতীয় রাজনীতির চাণক্য প্রণব মুখোপাধ্যায়,
•১৯৮০ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ৯ বারের সাংসদ, দেশের অর্থ, বিদেশ, প্রতিরক্ষা বিভাগের রক্ষাকর্তা যশোবন্ত সিং
• আবৃতি নাটক থেকে সাহিত্যকর্ম! বিশ্ব বিখ্যাত শিল্পী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
• ২০১৮ সালের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন মিত্র বাংলার রাজনীতির ছোড়দা
• জীবনের খেলার মাঠ ছেড়ে চলে গেলেন বিশ্ব বিখ্যাত ফুটবলার মারাদোনা, বাংলার ফুটবলের ইতিহাস চুনী গোস্বামী পিকে বন্দোপাধ্যায়, বিদেশি ফুটবলার পাওলো রসি, মনিতম্বি সিং, ফুটবল প্রশিক্ষক আলেক্সান্দ্র সাবেয়া।
• সুরের জাদুকর এসপি বালা সুব্রামানিয়াম, ওয়াজিদ খান, পণ্ডিত যশরাজ। জনপ্রিয় কোরিওগ্রাফার সরোজ খান, ফ্যাশন ডিজাইনার শর্বরী দত্ত।বলিউড অভিনেতা ঋষি কাপুর ইরফান খান সুসান্ত সিং রাজপুত, তাপস পাল, আসিফ বাসরা, সন্তু মুখোপাধ্যায় ।
• সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য অলক রঞ্জন দাসগুপ্ত দেবেশ রায়, পরিচালক নিশিকান্ত কামাত, বাসু চট্টোপাধ্যায়,অভিনেতা গায়ক শক্তি ঠাকুর।
• রাজনীতিবিদ শ্যামল চক্রবর্তী, তরুণ গগৈ।
• অর্জুন পুরস্কার প্রাপ্ত ক্রিকেটার চেতন চৌহান ছাড়াও ডিন জোন্স।
• বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার প্রাক্তন মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা, মেদিনীপুরের বিধায়ক খগেন মাইতি,প্রাক্তন মন্ত্রী ও বিধায়ক কাশীকান্ত মৈত্র, এগ্রা বিধানসভার বিধায়ক সমরেশ দাস, ফলতার বিধায়ক তামান্নাশ ঘোষ, কৃষ্ণনগরের বিধায়ক অবনী মোহন জোয়ারদার।
এছাড়াও বহু সংবাদ সংগ্রাহক, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধি দের হারিয়েছি আমরা।
পয়লা বৈশাখ, বিশ্বকর্মা পুজো, ঈদ ,দুর্গাপুজো, রথ, জগদ্ধাত্রী, রাস, বড়দিন, ক্রিসমাস নানা ধর্মীয় উৎসব, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্রিকেট ফুটবল সহ বিভিন্ন খেলার ম্যাচ এবং টুর্নামেন্ট থেকে বঞ্চিত হয়েছি আমরা। ছাত্র-ছাত্রী পঠন পাঠন অনুশীলনে পিছিয়ে গিয়েছি আমরা, দীর্ঘদিন কর্মহীন থাকার ফলে কাজ হারিয়েছি অনেকেই, ছোটো ছোটো কুটির শিল্প এবং সেই সংলগ্ন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন! ঘরের ছেলে কে, পরিযায়ী শ্রমিক বানিয়েছিলাম আমরা! দৈনিক পারিশ্রমিক ভিত্তিতে বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত শ্রমিকরা ঘরে বসে দেখেছিলেন রাজনৈতিক বিভিন্ন সভা-সমিতি এবং যোগদানের পালা!
তবে, দীর্ঘ লকডাউনে গৃহবন্দি থেকে বেড়েছে পারস্পারিক বন্ধনের দৃঢ়তা, অনুভূতি শক্তি, চেতনা! নিজেরা গৃহবন্দি থেকে বিভিন্ন যানবাহন, কলকারখানা থেকে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া বন্ধ রেখে পরিবেশের পশুপাখি কীটপতঙ্গ সকলের বাঁচার অধিকার করে দিয়েছি, আমি আমরা কেন্দ্রিক সমাজ ব্যবস্থায় প্রান্তিক মানুষদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে দেখা গেছে অনেককেই।
সমাজের সব অংশের মানুষেরই একটাই বক্তব্য নতুন বছরের শারীরিক সুস্থতার সাথে, নিজ নিজ পেশায় যেনো স্বাচ্ছন্দে থাকতে পারে।