অন্ধ হয়েও খেয়ার কান্ডারী ! দয়ার দান নিতে চান না বসু হালদার

Social

অঞ্জন শুকুল নদীয়া:হরি দিনতো গেল সন্ধ্যা হল পার করহে,আমারে ,ঠিক তাই । নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের শিবনিবাসে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শিবলিঙ্গ অবস্হিত ।রাজা কৃষ্ণচন্দ্র নীজের পরিবার ও রাজত্ব কে রখ্যা করবার জন্য খাল কেটে ছিলেন,আজ এই নদী চুর্ণী নদী নামে পরিচিত । প্রতিদিন খেয়া পার হয়ে শিবমন্দির দর্শন করতে আসেন হাজার হাজার পূরনাথী । আগে প্রচুর মানুষ একসঙ্গে খেয়া পারাপার করলেও পাশে ব্রিজ হওয়াই এখন লোকজন কম পার হয় ফেরিঘাটে ।শিবনিবাস হালদার পাড়ার বাসিন্দা বসু হালদার। বয়স ৬৫ ছুঁই ছুঁই। স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে তার ছোট্ট সংসার ছিল। মেয়েদের বিবাহ হয়ে গেছে। একমাত্র ছেলে কর্ম সূত্রে অন্য জায়গায় থাকে।এখন বাড়িতে স্ত্রী ও বসু বাবু। শিবনিবাস মন্দিরের ফেরি ঘাটে প্রতিদিন খেয়া পারাপার করেই স্ত্রী ও বসু বাবুর সুখের সংসার চলে । এমনকি খেয়া পারাপারের ক্ষেত্রে ওই অঞ্চলের সুখ্যাতি রয়েছে তাঁর।

কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! সম্প্রতি এক দুর্ঘটনায় বসু বাবু তাঁর দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। চোখে দেখতে পান না কিছুই। তবুও তিনি শিবনিবাস ফেরিঘাটেই বসে থাকেন। খেয়া পারাপারের দীর্ঘ বছরের অভ্যাস,সে যাবে কোথায়!! দৃষ্টিহীন অবস্থাতেই খেয়া পারাপার করে চলেছেন তিনি। তাতে দু-চার পয়সা যা আয় হয় তাতে দুটো পেট কোনমতেই চলে না। স্থানীয়রা অবশ্য তাকে প্রতিদিন কিছু না কিছু সাহায্য করেন।

কিন্তু তিনি এই দয়ার দান নিতে চান না। গরীব হলেও ভিক্ষা করতে রাজি নন তিনি।

তিনি বলেন, “বহু মানুষের কাছে গিয়েছি আমার চোখের চিকিৎসার জন্য। কিন্তু কোন সাহায্য পাইনি। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করছি যাতে আমার চক্ষু চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। যাতে আমি রোজগার করে খেটে দুটো পেট চালাতে পারি।”

ফেরিঘাটের মালিক মধু সিংহ বলেন এখন ঘাটে সেরকম আয় নেই, অন্ধ বলে কেউ কাজেও নেয় না বসুকে । সংসারটা মাটি হয়ে যাবে তাই বাধ্য হয়েই বসুকে রাখি । চোখের এই দৃষ্টি না থেকেও সম্পূর্ণ মনের জোরে এরকম ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা য়ায় তার জলজ্যান্ত প্রমাণ বসু বাবু । আমরাও চাই বসু বাবু দৃষ্টি ফিরে পান । তবে তার এহেন প্রচেষ্টা কে আমরা কুর্নিশ জানাই।

Leave a Reply