মলয় দে নদীয়া :-প্রচন্ড শীতের সঙ্গে শুরু হয়েছে কুয়াশা। কুয়াশা যাদের রুটি রুজির স্বাভাবিকত্ব নষ্ট করেছে, তারমধ্যে আনাজ কাঁচামাল বিক্রেতা, দুধ খবর কাগজ বিক্রেতা, নৈশ প্রহরী, স্থলচর আকাশ পথে পরিবহন কর্মী, মৎস্যজীবী, সহ বেশ কিছু পেশার কথা আপনারা জানেন। কিন্তু কাপড় জামা পরিষ্কার করা পেশার সাথে যুক্ত ধোপা শ্রেণীর মানুষের রুটিরুজি বন্ধ হতে চলেছে।
বাইরে যখন শীতের সকাল কুয়াশার চাদরে মুড়িয়েছে, অলসতার কারনে দু-তিন ঘণ্টা বাদে সকাল হয় আম জনতার। অনেকের কাছেই পরিবেশের এই অদ্ভুত আচরণ উপভোগ্য, লেন্স বন্দী আনন্দের হলেও অনেকের জীবনেই অন্ধকার ডেকে নিয়ে আসে।
এরকমই এক করুণ চিত্র উঠে এলো।
নদীয়া জেলার শান্তিপুর শহরের রামনগর চর, বেড়পাড়া, শৌচাগারের বেশ কিছু পরিবার জামা কাপড় পরিষ্কার অর্থাৎ বর্তমান চলতি ভাষায় লন্ড্রি’র কাজে সুপরিচিত রাজ্য জুড়ে। কলকাতা সহ রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় “শান্তিপুর লন্ড্রী” “শান্তিপুর ড্রাই ক্লিনার্স” নানান ঝাঁ চকচকে দোকান চোখে পড়ে! যার বেশির ভাগ কৃতিত্বের দাবিদার শান্তিপুর এই পরিবারগুলি। বংশপরম্পরায় তারা এই পেশার সাথে যুক্ত। মাসে দুই থেকে তিনবার চারচাকা ম্যাটাডোর ধরনের গাড়িতে করে কলকাতা থেকে পরিষ্কারের জন্য কাজ নিয়ে আসেন আবার পৌঁছেও দিয়ে আসেন সময় মতো।
দীর্ঘ লকডাউনের খুব সমস্যায় পড়েছিলেন তারা। যদিওবা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে! কিন্তু তাতেও শান্তি নেই তাদের। সকালের শীতে খাবার সোডা, ব্লিচিং পাউডার, চুন, নানান উপাদানে হাত এবং পায়ের চামড়ার অনুভূতি শক্তি প্রায় হারিয়েছে, কিন্তু কনকনে ঠান্ডা জলে কাজ করতে হাড়ের মধ্যে শিহরণ জাগে। শুধু শীতকাল নয়, বর্ষার বারংবার বৃষ্টি, গ্রীষ্মের প্রখর রৌদ্রে ক্লান্তি সবটাই কেড়ে নিতে চায় তাদের রোজগার। এতো গেলো শরীরের কথা! কুয়াশাচ্ছন্ন কারণে শীতের পোশাক , শাড়ি, লেপের কভার , সোফার ঢাকা, মশারি এরকম নানান বড় সাইজের কিছু কাচার পর শুকনো হতে লেগে যায় সারাদিন। মাড় দেওয়ার কাজ থাকলে উপযুক্ত রৌদ্র অভাবে পোশাক হয়ে পড়ে নরম, এবং দুর্গন্ধ! ফলে মালিকের কাছ থেকে পাওয়া যায়না উপযুক্ত পারিশ্রমিক। তবুও ওরা কাজ করে আনন্দে।