মানবতার নজির! ভবঘুরে দিদির যন্ত্রণার বিষন্ন মুখ, হাঁসিতে ভরালো ধুবুলিয়ার স্মাইল ফাউন্ডেশন

Social

মলয় দে, নদীয়া :-বাবা মায়ের ঘরে হয়তো অন্য কোন নাম ছিল কিন্তু স্থানীয় মানুষ তাঁকে মুখপুরি নামেই চেনে। মাঝবয়সী এক ভবঘুরে মহিলা। আদি বাড়ি ধুবুলিয়ায় হলেও তার বেশিরভাগ দিন কাটতো রানাঘাট স্টেশনে। ওখানে ভিক্ষে করে খাদ্যের সংস্থান করতো।

লকডাউনে গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ হওয়ায় ফিরে আসে বাড়িতে তার দিদির কাছে । বেশ চলছিল কিন্তু ওই কপালের ফের তাকে ভালো থাকতে দেয়নি। গত পরশু দুই বোন ধুবুলিয়া জাতীয় সড়কের পাশ থেকে যাচ্ছিল হঠাৎ এক বাইক আরোহী আচমকা ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। যন্ত্রণাকাতর বোনকে নিয়ে দিদি রাস্তায় অসহায়ের মতো চিৎকার করতে থাকে তৎক্ষণাৎ ধুবুলিয়া থানার পুলিশ পৌঁছায় এবং তাদের তৎপরতা ওনাকে নিয়ে যাওয়া হয় ধুবুলিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেখান থেকে রেফার করা হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে এবং সেখান থেকেই কারো মারফত খবর আসে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্মাইল ফাউন্ডেশন এর কাছে । ওই মহিলার চিকিৎসার প্রয়োজন। তৎক্ষণাৎ সংগঠনের সদস্যরা পৌঁছে যান শক্তিনগর হাসপাতাল এবং জানতে পারে খুব খারাপভাবে তার পা টা ভেঙেছে এবং অতি শীঘ্রই তার পায়ের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন তাই ডাক্তার তাকে রেফার করে কল্যাণীতে। কিন্তু এই অস্ত্র প্রচারের জন্য দরকার টাকা ও তত্ত্বাবধানের জন্য মানুষ। কিন্তু গরিব মানুষ কোথায় পাবে অত টাকা! তত্ত্বাবধানই বা করবে কারা ? কিন্তু যন্ত্রনাকাতর মুখটা দেখতে অভ্যস্ত নয় তারা! কারণ সংগঠনের নাম স্মাইল ফাউন্ডেশন।

সদস্যরা ডাক্তার বাবুর সাথে কথা বলে এবং সমস্ত বিষয়টা ওনাকে জানায়।সব শুনে ডাক্তারবাবু কথা দেন উনি নিজেই অস্ত্রপ্রচার করবেন এবং সেটাও সম্পূর্ণ নিখরচায় । তবে নার্সিংহোমের খরচ ও পায়ে যে ধাতব পাতটি‌ বসবে তার খরচও খুব একটা কম নয় ওদিকে হাতে মাত্র একটা দিন সময়। কিন্তু তারা পণ নিয়েছে দিদিকে সুস্থ করবেই ! তাই সেই রাতেই ধুবুলিয়া বাসী ও স্মাইল ফাউন্ডেশন পরিবারের সকল সদস্যের কাছে আবেদন রাখে। অর্থ সাহায্যের জন্য খুব কম সময়ে অভুতপূর্ব সাড়া পায় তারা। আর গতকাল রাতে কৃষ্ণনগরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ডা: দিগন্ত মন্ডল ওই দিদির সফল অস্ত্র প্রচার করেন। এখন দিদি ভালো আছেন, বলেই জানিয়েছেন তারা। এবং তারা আশাবাদী খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে তাদের প্রিয় মুখপুরী দিদি।

Leave a Reply