মলয় দে, নদীয়া:- নদীয়া জেলার করিমপুর ব্লকের মুরুটিয়া অঞ্চলের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বর্তমান করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়। একদম ছোটবেলা থেকেই পিতা মাতা হারা হন তিনি এবং তার তিন ভাই এক বোন। মেজো জেঠিমা উমা সিংহ রায় কাছের মানুষ হন প্রত্যেকে। ওই গ্রামেরই বালিয়াডাঙ্গা হাইস্কুলে পাঠ শেষ করার পর কৃষ্ণনগর গভমেন্ট কলেজে স্নাতক হন তিনি। শুধুমাত্র জ্ঞানপিপাসায় বাংলা, ইংরেজি এবং শিক্ষাবিজ্ঞানে পরপর তিনবার স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।
নদীয়া মুড়াগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে পেশা নির্বাচন করেছিলেন, বর্তমানে অবশ্য অবসরপ্রাপ্ত। নিজো পেশায় যথেষ্ট মনোযোগী ছিলেন সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না! কারণ, জাতীয় শিক্ষকের মর্যাদা দিয়ে রাস্ট্রপতি পুরস্কার দেওয়া হয় তাঁকে। পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষারত্ন পুরস্কার। তবে সক্রিয় রাজনীতিতে খুব বেশি যোগাযোগ না থাকলেও করিমপুর বিধানসভার নিরপেক্ষতা বজায় রেখে নির্ভীক ভাবে সমাজের সকল অংশের সঙ্গে সমান যোগাযোগ ছিলো তাঁর। এ কথা জানতে পেরেই হয়তো ২০১৯ সালে নভেম্বর মাসে করিমপুর উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং তাকে নির্দেশ দেন ওই অঞ্চলে বিধায়ক হিসেবে জনপ্রতিনিধিত্ব করার জন্য। জয়লাভও করেন তিনি। দীর্ঘ লকডাউনে কর্মহীন পরিবারের সহযোগিতায় হোক বা সচেতনতায় বিধায়ক প্রতিদিন বিভিন্ন পাড়ায় পৌঁছতেন নিয়ম করে। সরকারি সুযোগ-সুবিধা বন্টনের ক্ষেত্রেও ভোটার স্লিপ এর মতন বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার তত্ত্বে বিশ্বাসী তিনি।
বিধানসভার বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মানুষের সংস্পর্শে আসার কারণে গত দু’মাসে তিনি তিনবার কোভিড পরীক্ষা করেন, প্রতিবারই রিপোর্ট ছিল নেগেটিভ। কিন্তু গত ৮ তারিখে শারীরিক কিছু অসুস্থতা অনুভব করে করিমপুর নতিডাঙ্গা হাসপাতালে টেস্ট করালে দুর্ভাগ্যক্রমে পজেটিভ রিপোর্ট আসে তাঁর। এমত অবস্থায় কৃষ্ণনগরের বাড়িতে নিজেকে এককভাবে সুরক্ষিত রাখেন তিনি। অন্যদিকে বিধানসভার তার শুভাকাঙ্খীরা বেশ খানিকটা ভেঙে পড়ে বিধায়কের অসুস্থতার খবর পেয়ে। তারা নিজ নিজ ধর্মের বিশ্বাসে পুজো, হোম যজ্ঞ, নামাজ, দোওয়া প্রার্থনা করে বিধায়কের সুস্থতা কামনা করেন। বিধায়ক তাঁর নিজস্ব গ্রামের বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় প্রতিদিন রক্ষা কালী মন্দিরে প্রণাম করে তবেই যেতেন যে কোন কাজে, তাই সেই মন্দিরেই আজ হোম যজ্ঞ পুজোর আয়োজন করলেন হিন্দু ধর্মালম্বী শুভাকাঙ্খীরা।
অন্যদিকে মুসলমান সম্প্রদায়ের শুভাকাঙ্খীরা নিজের বাড়িতেই আল্লাহর কাছে দোওয়া প্রার্থনা করলেন তাদের প্রিয় বিধায়ককে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে পাওয়ার জন্য।