মলয় দে, নদীয়া :- নদীয়ার শান্তিপুর ব্লকের কালিপুর এবং ফুলিয়া পাড়ার বাসিন্দা রাজাপ্রসাদ পাল, বিশ্বনাথ পাল, রাজু সরকার ছাত্রাবস্থায় থেকেই পরিবেশের বাঁচানোর হাতছানি দেয় তাদের। এর আগেও টাইগার হিলে সাইকেলে করেই পৌঁছেছিলেন শান্তিপুর থেকে, সেবারে বার্তা ছিলো, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জন সহজে পচনশীল দ্রব্য ব্যবহার এবং সবুজ ও পরিষ্কার ভারত গঠন। এবারে একটি বিশেষ বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে “ক্লাইমেট চেঞ্জ” অর্থাৎ অন্য কোনো প্রাণী নয় একমাত্র মানুষই তাদের দৈনন্দিন ব্যবহৃতপরিত্যক্ত এবং নিজেদের জীবন ধারার পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটিয়ে বিজ্ঞানকে যথেচ্ছ ব্যবহারের মাধ্যমে অন্য প্রাণীদের কথা না ভেবেই এই বসুন্ধরা কলুষিত করে চলেছে নিয়মিত। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের একটি সমুদ্রে ৯০ হাজার ডলফিন মারা যায় শুধুমাত্র প্লাস্টিকের কারণে, এই ঘটনার মতো বেশ কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই মর্মাহত হন তারা। অথচ ডিসকভার ইন্ডিয়ার সদ্য প্রকাশিত একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী তারা জানতে পেরেছে মেঘালয় রাজ্যের ইস্ট খাসিহিল জেলার মলাইনং গ্রামের কথা।
এশিয়ার মধ্যে উল্লেখযোগ্য এই গ্রামে সম্পূর্ণভাবে বর্জন করা হয়েছে একবার ব্যবহার করা প্লাস্টিককে। পাড়ার মোড়ে মোড়ে রাখা থাকে ডাস্টবিন। ঝরনার জলকে কাজে লাগিয়ে অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যবহার্য্যর সাথে চাষাবাদেও পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়! এমনকি মোবাইল ব্যবহারের সময়সীমা, পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় কাজ অনুযায়ী।
শান্তিপুরের তন্তুবায় পরিবারের এই তিন বন্ধু সাইকেল চালিয়ে আজ সকাল সাতটায় শান্তিপুর ডাকঘর নেতাজির পাদদেশ থেকে পাড়ি দিলো মেঘের দেশে! সেখান থেকেই পরিবেশ বাঁচিয়ে ভালো থাকার মূলমন্ত্র শিখে পনেরশো লিফলেট তিনটি রাজ্য এবং তার অন্তর্গত ১৫ টি জেলার মানুষকে সচেতন করতে করতে ফিরবে নিজের জন্মভূমিতে। উদ্যোগী দের কাছ থেকে জানা যায় ,যাওয়া-আসার এবং রাতে থাকার বিষয়ে সম্পূর্ণ ভাবে সহযোগিতা করেছে “শান্তিপুর পরিবেশ ভাবনা মঞ্চ”। মোট কুড়ি দিন সময়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ঔষধ, খাদ্যদ্রব্য রান্নার স্টোভ, জামা কাপড় মোবাইল চার্জার এবং অত্যাবশ্যকীয় কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে তাদের রওনা হওয়ার সাক্ষী থাকতে এবং তাদের অনুপ্রেরণা যোগাতে উপস্থিত ছিলেন শান্তিপুরের পরিবেশ ও বিজ্ঞান কর্মী, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য সহ সমাজের সব অংশের সহৃদয় ব্যক্তিবর্গ। নেতাজির গলায় মালা দিয়ে, উপস্থিত সকলের কণ্ঠে উচ্চারিত জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে পাড়ি দিলো মেঘের দেশে। কিছুটা সময়ের জন্যে হলেও তাদের এই অভিযানে প্রত্যুতগামী সহযাত্রী হিসেবে ছিলেন পরিবেশ ভাবনা মঞ্চের অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক সঞ্জীত কাষ্ঠ।