দারিদ্রতাকে হার মানিয়ে সাফল্য উচ্চমাধ্যমিকে

Social

মলয় দে নদীয়া:- নদীয়া জেলার শান্তিপুর ব্লকের ফুলিয়া চটকাতলা এলাকায় এবছরের উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা অন্বেষণে যাওয়ার সময় বড় বড় অট্টালিকা, স্বনামধন্য কাপড়ের ব্যবসায়ীর ঝাঁ চকচকে গ্লঝসাইন বোর্ড পার করে ফুলিয়া বাসষ্ট্যান্ড পাড়ায় এক টিনের বাড়িতে খুঁজে পাওয়া গেলো প্রতিভা। পেশায় তাঁত শ্রমিক সুনীল বসাকের একমাত্র সন্তান সুমিত বসাক ফুলিয়া শিক্ষানিকেতন বিদ্যালয় থেকে এবছর উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৮৫ নম্বর পেয়েছে। সারাদিনে তাঁত বুনে মজুরি হিসেবে দৈনিক100 টাকা পেয়ে কোনরকমে সংসার চালান নিখিল বাবু। তাই সুমিত পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকেই মহাজন’ বাড়িতে কাপড় দিয়ে আসা, কখনো বা সুতো পাকানো নানান কাজে সহযোগিতা করত বাবাকে।

খানিকটা এগিয়ে ফুলিয়া চটকাতলার আশ্রমপাড়া য় নিখিল বসাক এর একমাত্র কন্যা সুস্মিতা ছোটবেলায় হার্টের অপারেশন হওয়ার পর থেকে কথা বলতে অসুবিধা বোধ করে। মাধ্যমিকে ভালো রেজাল্ট করার পর স্কলারশিপের টাকায় উচ্চমাধ্যমিকে পদার্পণ। বাবা অন্যের কাপড়ের দোকানের ৪০০০ টাকার বেতনভুক্ত কর্মচারী । বিজ্ঞান বিভাগের এই ছাত্রীর কোন কোন গৃহশিক্ষকে গুরুদক্ষিণা দিতে পারেননি বেশ কয়েকবার।

সুস্মিতা খুব ভালো ছবি আঁকতো, বাবার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে সেশখ থেকেও দূরে সরিয়ে রেখেছিলো নিজেকে। সুস্মিতার মায়ের কথা অনুযায়ী মেয়ে বড়ই অভিমানী বাবার আর্থিক সংগতির কথা ভেবেই এবার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার অদম্য ইচ্ছা হয়তো সরিয়ে রাখবে দূরে। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী এ ব্যাপারে কেউ সহযোগিতা করলে অনিশ্চিত সাফল্য পাবে। 97.4 শতাংশ নম্বর পেয়ে ফুলিয়া বালিকা বিদ্যালয় থেকে সুস্মিতা এবছর শান্তিপুরের মধ্যে প্রথম হয়েছে।

অন্যদিকে নৃরসিংহ পুর এলাকার অর্জুন বিশ্বাসের কন্যা অর্পিতা বিশ্বাস এবছর রাধারাণী নারী শিক্ষা মন্দির থেকে ৪৮১ নাম্বার পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে। ধানের আড়তের অস্থায়ী কর্মচারী অর্জুন বাবু জানান আমাদের মতো ঘরে পড়াশোনার খরচ যোগান দেওয়া দুঃসাধ্য।

তবুও ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখে এই বয়সেও কর্মঠ হয়ে উঠেছিলাম অনেকটাই। কিন্তু লক ডাউনে নূন্যতম আয়ের উপায় টাও বন্ধ হয়ে গেল! এখন দুশ্চিন্তায় মেয়ের ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছা পূরণ করতে পারব তো??

Leave a Reply