মন্দির নগরী: বিষ্ণুপুর (প্রথম পর্ব)

Social

বিকাশ চক্রবর্তী : পোড়ামাটির (টেরাকোটা) কাজ দেখতে হলে ঘুরে আসতে পারেন বিষ্ণুপুর। ঐতিহাসিক শহর বিষ্ণুপুর ও সংলগ্ন অঞ্চল তাঁত শিল্প, পোড়ামাটির কাজ, লন্ঠনশিল্প এবং ডোকরার জন্য জগদ্বিখ্যাত।

বিষ্ণুপুর শহর মূলতঃ টেরাকোটা অর্থাৎ পোড়ামাটির শিল্প সমৃদ্ধ মন্দিরের জন্য খ্যাত। মল্লরাজাদের আমলে নির্মিত মন্দিরগুলোর বেশীরভাগটাই চারচালা এবং একচূড়া বিশিষ্ট। তবে পাঁচচূড়া বিশিষ্ট মন্দিরও (যেমন, শ্যাম রাই মন্দির) আছে।

টোটো ভাড়া করে ঘন্টা চারেক সময়ের মধ্যে বিষ্ণুপুরের মন্দিরগুলো খুব সুন্দরভাবে দেখে নেওয়া যায়। অবশ্য, মন্দিরের গায়ে পোড়ামাটির কাজগুলো সময় নিয়ে দেখা দরকার। কিছু কিছু মন্দিরে অবশ্য কাজগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।

এখানকার মন্দিরগুলোর মধ্যে রাসমঞ্চ, জোড় বাংলা এবং শ্যাম-রাই মন্দিরের জন্য টিকিট কাটটে হবে (একসাথে 25/- টাকা), বাকী মন্দিরগুলোতে অবাধ প্রবেশ।

টোটোতে করে পর পর দেখে নেবেন, রাসমঞ্চ, মদনমোহন মন্দির, পাথরের রথ, রাজবাড়ীর ফটক (পাথরের তৈরী দুটো গেট, একটি ছোট, অন্যটি বড়), লালজী মন্দির, বিষ্ণুপুর রাজবাড়ী (যদিও ভেতরে ঢুকতে অনুমতি লাগবে), মৃন্ময়ী মাতার মন্দির (রাজবাড়ীর দূর্গা মন্দির, এখানে একটা ছোট্ট কামান আছে), রাধাশ্যাম মন্দির, জোড় বাংলা মন্দির, গুমঘর, শ্যামরাই মন্দির, লালবাঁধ, দলমাদল কামান, নিস্তারিণী মন্দির।
লালবাঁধের কাছেই রামানন্দ কলেজ এবং প্রসার ভারতীর ক্যাম্পাস।

বিষ্ণুপুর ঘুরতে এলে শনিবারে আসা উচিত। কারণ, শনিবার বিকেলে বিষ্ণুপুরের আরেক আকর্ষণ হলো, পোড়ামাটির হাট।

জোড় বাংলা মন্দিরশ্রেণীর কাছের মাঠে এই মেলাটি বসে। মেলা যেখানে হয়, তার আশে পাশে আরো কিছু মন্দির আছে। একই প্যাটার্নের।

জোড় বাংলা মন্দিরশ্রেণী ( এটি জোড় বাংলা মন্দির নয়, এখানে একই ক্যাম্পাসে তিনটি একচূড়া বিশিষ্ট মন্দির আছে), নন্দলাল মন্দির, রাধাগোবিন্দ মন্দির, রাধামাধব মন্দির, কালাচাঁদ মন্দির গুলো মেলার পাশেই, হেঁটেই দেখে নেওয়া যায়।
বিকেলের পড়ন্ত আলোতে গ্রামের পথে হাঁটতে হাঁটতে মন্দির দেখার একটা আলাদা অনুভূতি আছে।

মেলাতে সন্ধ্যের একটু আগে স্থানীয় আদিবাসী নৃত্যের আসর বসে, বসে বাউল গানের আসর।
তাছাড়া পোড়ামাটির জিনিসপত্র (এখানে মাটির শঙ্খ দেখতে পাবেন, যেটি দারুণ সুন্দর বাজে), তাঁতের শাড়ী নিয়ে পসরা সাজান স্থানীয় লোকজন।


(…চলবে)