উত্তরবঙ্গের কুলিকে চলছে গাছ গাছালির সমীক্ষা

Social

রায়গঞ্জঃ এই প্রথম রায়গঞ্জের কুলিক বনাঞ্চলের গাছগাছালি নিয়ে সমীক্ষার কাজ শুরু করেছেন রায়গঞ্জের দুই গবেষক। কুলিক বনাঞ্চলের উদ্ভিদ, ছত্রাক ও লাইকেনের বৈচিত্র্য জানতে শুরু করা হয়েছে সমীক্ষা। বন দপ্তরের উদ্যোগে এই সমীক্ষা শুরু হতেই একাধিক বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ, ছত্রাকের খোঁজ মিলতে শুরু করেছে। এই সমীক্ষার মাধ্যমে কুলিকের উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের পাশাপাশি গ্রোয়িং স্টক, কেনোপি ঘনত্ব, ছত্রাক বৈচিত্র্য, আগাছা, পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ, জীবজন্তুর ধারন ক্ষমতা ইত্যাদি জানা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন দুই গবেষক। ফি বছর নিয়ম করে পরিযায়ী এশিয়ান ওপেন বিল স্টর্ক, নাইট হেরন পাখিরা এখানে আসে মূলতঃ বংশবৃদ্ধির কারনে। ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা দিয়ে তাদের উড়তে শিখিয়ে আবার পাখিরা নিজেদের দেশে ফেরত চলে যায়। প্রতি দেওয়ার পরে কত পাখি এই বনাঞ্চলে এসেছিল, তার সুমারি করে বন দপ্তর। একটি পাখির বাসায় পাখি দম্পতি এবং তাদের দুটো শাবক রয়েছে, এই হিসাবে বনাঞ্চলের গাছগুলিতে পাখির বাসা গোনা হয়। সেই সংখ্যার সঙ্গে চার দিয়ে গুন করে করা হয় পাখির হিসাব। একই সাথে জঙ্গলে গাছের সংখ্যার হিসেবও করা হয়৷ তবে উদ্ভিদ, ছত্রাক ও লাইকেনের কত বৈচিত্র্য এই জঙ্গলে রয়েছে তা জানতে এখনও কোনও সমীক্ষার আয়োজন আগে কখনও করা হয়নি। এবার সেই সব অজানা তথ্য জানতেই কুলিকে শুরু হয়েছে সমীক্ষা। বন বিভাগের আধিকারিকদের তত্ত্বাবধানে এই সমীক্ষা শুরু করেছেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরিকালচার ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক তথা ট্যাক্সনমি বিশেষজ্ঞ ডঃ তন্ময় চৌধুরী ও বোটানি বিষয়ের শিক্ষক ডঃ উতংক দেব। তন্ময়বাবু বলেন, ‘গত ৬ জুন থেকে এই সমীক্ষা আমরা শুরু করেছি৷ বর্ষার আগে ও পরে এবং বসন্ত কালে এই সমীক্ষা চালানো হবে কুলিক বনাঞ্চল জুড়ে। সমীক্ষা শুরু হতেই মাত্র তিনদিনের মধ্যে উদ্ভিদের নানান বৈচিত্র্য সামনে উঠে এসেছে৷ বেশ কিছু বিরল উদ্ভিদের সন্ধানও মিলছে’। তিনি জানান, কচু প্রজাতির ‘টাইফোনিয়াম ফ্ল্যাজেলিফরমি’ ও ‘অ্যামোরফো ফ্যালাস মারগারিটিফার’ নামের দুই উদ্ভিদের সন্ধান মিলেছে। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে এই উদ্ভিদের অস্তিত্ব আগে কোথাও পাওয়া যায়নি। এছাড়া কুমড়ো প্রজাতির ‘লুপফা অপারকিউলটা’ উদ্ভিদের সন্ধান মিলেছে এই জঙ্গলে। সমীক্ষা যতই এগিয়ে যাবে ততই নানান প্রজাতির আরও উদ্ভিদের সন্ধান মিলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তন্ময়বাবু।

Leave a Reply