রায়গঞ্জ : লকডাউন উঠলেও স্কুল ছুটি জুন মাস পর্যন্ত। তাই রায়গঞ্জ শহরাঞ্চলের একাধিক সরকারি প্রাইমারি স্কুলে অনলাইনে পঠনপাঠন শুরু হল। তবে অধিকাংশ বেসরকারি স্কুল অনলাইনে পঠনপাঠন শুরু করে দিয়েছে অনেক আগেই। দীর্ঘদিন ধরে স্কুলগুলি বন্ধ থাকায় পঠনপাঠন শিকেয় উঠেছে। বাড়ির ছোটদের পড়াশোনার ক্ষতি হওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে অভিভাবকদের। এবার সেই পথেই হাটতে শুরু করল রায়গঞ্জের একাধিক সরকারি প্রাইমারি স্কুল।
কোনও স্কুল নিজস্ব ওয়েবসাইটে, কেউ নিজস্ব ফেসবুক পেজে, আবার কেউ শ্রেণি ভিত্তিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে পঠনপাঠনের বিভিন্ন তথ্য ও প্রশ্নপত্র আপলোড করছে। যাদের বাড়িতে এই সুবিধা নেই তাদের ফোন করে প্রথম সামেটিভে প্রশ্নপত্র বলে দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে স্কুলগুলি তাদের নিজেদের নোটিশ বোর্ডে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত প্রশ্নপত্র সাঁটিয়ে দেওয়া শুরু করেছে। মিড ডে মিলের চাল, আলু নিতে আসা অভিভাবকদের মাধ্যমে স্কুলগুলি বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে। জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকারা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সামেটিভ প্রশ্নপত্র পেয়েছেন। সেই প্রশ্নপত্র ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দিয়ে দিচ্ছেন তারা। প্রতিটি প্রশ্নপত্র পড়ে উত্তর লেখার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। স্কুল খুললে প্রত্যেককে সেই উত্তরপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে রায়গঞ্জ গার্লস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক গৌরাঙ্গ চৌহান বলেন, ‘জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে আলোচনা করেই আমাদের বিদ্যালয়ে অনলাইনে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত আলাদা আলাদা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ করা হয়েছে। সেইগ্রুপে প্রশ্নপত্র আপলোড করা হয়েছে। শিক্ষকদের ক্লাসও আপলোড করা হয়েছে। অন্যদিকে, রায়গঞ্জ জিএসএফপি স্কুল অনলাইনে পঠনপাঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অনুপ মালাকার বলেন, ‘আজ চাল দেওয়া শেষ হলেই আমরা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ করে বিদ্যালয় পরিদর্শকের পাঠানো প্রশ্নপত্র পড়ুয়াদের পাঠানো শুরু করব।’ নেতাজিপল্লীর সরলা সুন্দরি জিএসএফপি স্কুল তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রশ্নপত্র পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে আপলোড করেছে। বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকা অঞ্জনা কুন্ডু ধর বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের অভিভাবকেরা যথেষ্ট সচেতন। তারা ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তাই কোনও সমস্যা নেই। পাশাপাশি স্কুলের নোটিশ বোর্ডে লিখে দেওয়া হয়েছে।’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(প্রাথমিক) দীপক কুমার ভক্ত বলেন, ‘রাজ্য থেকে যে সমস্ত প্রশ্নপত্র এসেছে সেগুলি আমরা বিদ্যালয়গুলিতে পাঠিয়ে দিয়েছি। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সেই প্রশ্নপত্র পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এজন্য কেউ হোয়াটসঅ্যাপ, কেউ ওয়েবসাইট, আবার কেউ ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। আবার কোনও স্কুলে অভিভাবকদের হাতে তুলে দিচ্ছেন তারা। গ্রামাঞ্চলে একটু সমস্যা হচ্ছে।’