সোশ্যাল বার্তা: কোভিডে আক্রান্ত দু:স্থ রোগীদের ওষুধ, শুকনো খাবার, ফল এমনকি মুদি দ্রব্য দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের কিছু শিক্ষক- শিক্ষিকারা।
প্রায় মাস খানেক আগে কিভাবে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহযোগিতা করা যায় তা নিয়ে কৃষ্ণনগরের শিক্ষক দম্পতি সঞ্জয় ঘোষ ও ঝুমা দাসঘোষের বাড়িতে আলোচনা করতে মিলিত হন কৃষ্ণনগরে ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। তারপর শুরু হয় তাদের কাজ।
প্রশাসনের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করে নিয়মিত ভাবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের ফোন করে খোঁজ খবর নেওয়া এবং কার কি প্রয়োজন সেভাবেই জিনিসপত্র দেওয়ার কাজ শুরু।
সংস্থাটির নাম দেওয়া হয়েছে কোভিড কেয়ার সহযোগিতায় ও সহমর্মিতায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা । কৃষ্ণনগরের সদরের মোড়ের কিশলয় নামক বিদ্যালয় চলে রোগীদের দেওয়ার জন্য জিনিসপত্র গোছানো। সেখানেই মিলিত হন শিক্ষক শিক্ষিকারা। জিনিসপত্র সেখান থেকে নিয়েই করোনা আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে দিতে যান তাঁরা।
গত সোমবার সকাল ৭ টা থেকে সামাজিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেন এই সংস্থার সদস্যরা। শহরের সদরের মোড় থেকে মাইকিং শুরু হয়। করা হয় লিফলেট বিলিও। পথচলতি সাধারণ মানুষ, টোটোচালক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ট্রাফিক পুলিশ এবং কোতয়ালী থানার পুলিশকর্মী, দোকানদের মধ্যে ১৫০০ মাস্ক এবং ৩৫০ বোতল স্যানিটাইজার বিলি করেন।
এই বিষয়ে কবি বিজয় লাল এইচএস ইনস্টিটিউটের শিক্ষক অসীমানন্দ মজুমদার জানান “সাধারণ মানুষের মধ্যে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করতেই আমাদের এই উদ্যোগ”।
সংস্থার পক্ষে কুলগাছি বিদ্যামন্দিরের শিক্ষক সঞ্জয় ঘোষ জানান ” ৬জন শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়ে কাজ শুরু হলেও এখন দূর-দূরান্ত থেকেও প্রায় ১০০ জনের বেশি শিক্ষক শিক্ষিকারা এই মহৎ কাজে সামিল হয়েছেন। সবাই মিলে চেষ্টা করছি এই অতিমারির সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাড়ানোর”।
প্রীতিনগর ভূদেব স্মৃতি বিদ্যাপীঠ এর শিক্ষক সৌগত কুমার দাস বলেন “অনেক মানুষ কর্মহীন হয়েছেন তাই করোনা আক্রান্ত রোগী ছাড়াও কিছু দু:স্থ মানুষকেও সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে”।
নওপাড়া রুপদহ হাইস্কুলের শিক্ষক জীবানন্দ বিশ্বাস জানান “এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে ভালো লাগছে”।
আর সি পাড়া লেন এর একজন কোভিড আক্রান্তের পরিবারের কাছ থেকে জানা যায় বাড়ির তিন জন সবাই করোনা আক্রান্ত। আশা কর্মীদের দেওয়া ওষুধ খাচ্ছেন । টোটো চালিয়ে সংসার চলতো। ওনারা পাশের বাড়িতে এসেছিলেন জিনিসপত্র দিতে। আমাদের কথা জানতে পেরে ফল,শুকনো খাবার থেকে শুরু করে মুদিখানার চাল,ডাল,ডিম, তেল সহ অনেকে জিনিসপত্র দিয়ে গেছেন। বিপদের দিনে শিক্ষক শিক্ষিকারা যেভাবে পাশে দাড়ালেন সারা জীবন মনে থাকবে।
চক দিগনগর তারক দাস মেমোরিয়াল হাইস্কুলের শিক্ষিকা ঝুমা দাসঘোষ জানান “প্রশান্ত সিংহ, পার্থপ্রতীম প্রামাণিক, অরিন্দম ঘোষ, সৌরভ বসাক, ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত, নারায়ণ দাস, সুপ্রিয় ঘোষ, অভিজিৎ প্রামাণিক কুণ্ডু বাবু সহ অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকারা সরাসরি মাঠে নেমে কাজ করছেন আমাদের এই সংস্থাটির পক্ষ থেকে তাদেরকে অভিনন্দন জানাই।”