রায়গঞ্জঃ লক ডাউন চলছে । অনেক মানুষ নিজেদের পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে পেশার পরিবর্তন করেছেন । কিনন বিয়ে বাড়ি হোক, কিংবা হোক জন্মদিন, অন্নপ্রাশন। যাঁদের তোলা সুরে অনুষ্ঠানবাড়ি হয়ে উঠে প্রাণবন্ত, সেই ব্যান্ডপার্টির দল আজ লকডাউনের ফলে দিশেহারা। ফাল্গুন মাসে শেষ কাজ, তারপর থেকে শুরু লকডাউন। অগ্রিম বুকিংও হয়েছে। এখন বুকিংয়ে টাকা ফেরত পেতে তাঁদের দুয়ারে হানা দিচ্ছেন অনুষ্ঠানবাড়ির মানুষজন।
হঠাৎ করে কর্মহীন হয়ে পড়ায় রুজিরুটিতে টান পড়েছে। প্রায় অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন এই পেশার সঙ্গে যুক্ত রায়গঞ্জ শহরের শতাধিক পরিবার। রায়গঞ্জ শহরের ব্যান্ডপার্টি দলের একটা বড় অংশ বসবাস করে থাকেন নট্টপাড়া এলাকায়। ব্যান্ডের জাদুকর নামে খ্যাত লাল মহম্মদের পরিবার এই এলাকায় আসেন উত্তরপ্রদেশের বেনারস শহর থেকে। ব্রিটিশ আমলে এই পরিবার প্রথমে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর পরে নট্টপাড়ায় আসেন। রায়গঞ্জ শহরে লাল মহম্মদ তাঁদের জাত পেশা ব্যান্ডপার্টির সূচনা করেন। জেলার বহু ব্যান্ডপার্টির দলের শিক্ষাগুরু হলেন লাল মহম্মদ। লাল মহম্মদের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও বর্তমানে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। শুধুমাত্র নট্টপাড়ায় রয়েছে ১০টি ব্যান্ডের দল। রায়গঞ্জ শহরে ব্যান্ড পার্টির সংখ্যা ৫০-এর বেশি। প্রতিটি দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ২৫ থেকে ৩০ জন করে।
লাল মহম্মদ পরিবারের সদস্য মহঃ সফির দুটো বাজনার দল রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। আমার দলে বাদক রয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন। তাঁদের সংসার চলে এই বাজনার কাজ থেকেই। ফাল্গুন মাসের শেষলগ্নে আমাদের কাজ হয়েছে। তারপর থেকে কাজ বন্ধ।
একমাস ধরে শুরু হয়েছে লকডাউন। কতদিন চলবে কারও জানা নেই। অনেক অনুষ্ঠানবাড়ির কাজ ধরা ছিল। এখন সবগুলো বুকিং বাতিল হয়েছে। শুধু তাই নয় বুকিংয়ের অগ্রিম ফেরত চাইতে আসছেন। অনেকের টাকা ফেরত দিয়েছি। আবার অনেকের দিতে পারিনি। সংসার টানতে সেই টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে আর কিছু নেই। স্থানীয় কাউন্সিলার আর পাড়ার ক্লাব সামান্য রিলিফ দিয়ে গিয়েছিল সেটাও শেষ। এখন চলব কীভাবে বুঝে উঠতে পারছি না।