লকডাউন এ সংক্রমণের ভয় কে জয় করে মানবিক মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ

Social

দেবু সিংহ মালদা : একদিকে সংক্রমণের ভয় অন্যদিকে পরিবারের চিন্তা এই সমস্তদিক মাথায় রেখেই দিনরাত্রি লকডাউন এর বাজারে ক্রমাগত এলাকা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ প্রশাসন। ব্যতিক্রম নয় মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা। সকাল থেকেই হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সমস্ত আধিকারিক সিভিক ভলেন্টিয়ার ভিলেজ পুলিশরা বেরিয়ে পড়ছে বিভিন্ন এলাকায়।

এলাকায় জমায়েত নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় ছুটে যাচ্ছেন করোনা ভাইরাস সম্পর্কে এলাকার মানুষদের সচেতনতার উদ্দেশ্যে এবং লকডাউন মেনে চলার অনুরোধ নিয়ে। নিজেদের সংক্রমণ ঠেকাতে সঙ্গী কেবল মাস্ক। এরইমধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিবা রাত্রি পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ প্রশাসন। মাথায় পরিবারের জন্য একরাশ চিন্তা। কিন্তু কিছু করার নেই। দেশ তথা রাজ্যের জরুরি অবস্থা তে তারাই এখন মানুষের আশা ভরসা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিভিক ভলেন্টিয়ার জানালেন আমরা হরিশ্চন্দ্রপুর থানা ষোলটি পঞ্চায়েত এলাকাতেই মানুষকে বোঝাচ্ছি অযথা আতঙ্কিত হবেন না লকডাউন মেনে চলুন। করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে ঘরে থাকুন। অযথা ভিড় করবেন না। জমায়েত করবেন না। ভিড় জমায়েত নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের সব সময় বাইরে থাকতে হচ্ছে। এই নিয়ে আমাদের পরিবার চিন্তিত। আমরাও চাই সবাই এটা বুঝুক।

এরইমধ্যে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা র মানবিক মুখ দেখেছে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকাবাসী।দুঃস্থ গরীব দরিদ্র মানুষদের হাতে বেশ কয়েক দিনের খাবার তুলে দিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস। এমনকি অসহায় বৃদ্ধকে বাড়ি পৌঁছে দেয়া হলো পুলিশের সহায়তায়।
অন্যদিকে বেশ কিছুদিন আগে এলাকার গড়গড়ি গ্রামে এক বৃদ্ধা বেশ কিছুদিন থেকে না খেয়ে ছিলেন। লকডাউন এ কাজ করতে যেতে পারেননি তাই খাবার জোটে নি।খবর পেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ তার বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু এসব ঘটনা নিয়ে প্রচার চান না হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। আসতে চান না সংবাদ শিরোনাম এ। এমনটাই জানালেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানা আইসি সঞ্জয় কুমার দাস। তিনি জানান বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আমাদেরকে কাজ করতে হয়। এটাই আমাদের কর্তব্য। জরুরী সময় পিছিয়ে আসতে হয় না। পরিবারের জন্য আমাদেরও চিন্তা হয়।কিন্তু আমাদের শুধু নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করলে হবে না।থানার সমস্ত আধিকারিক ও সিভিক ভলেন্টিয়ার আমার পরিবারের মতো।

এছাড়া হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার সমস্ত মানুষকে আমি আমার পরিবারের সদস্যদের থেকে কিছু কম মনে করি না। তাই করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মানুষ যাতে অযথা আতঙ্কিত হয়ে না পড়ে এবং লকডাউন কে সঠিকভাবে মেনে চলে সেই চেষ্টাই আমরা দিবারাত করে যাচ্ছি। আগামীতেও করে যাব।এছাড়াও হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার কোন মানুষ জরুরী পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেই বিষয়টিও আমরা সব সময় নজর রাখছি। বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে মানুষকে বোঝানোর জন্য ছুটে যেতে হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা এলাকার মানুষদের কে সচেতন করছি। দিনের-পর-দিন সিভিক ভলেন্টিয়ার এলাকায় পড়ে থাকছেন।আমরা চাই সাধারণ মানুষ উদ্ভূত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সরকার নির্দেশিত লকডাউন মেনে চলুক আগামী কয়েকদিন।

Leave a Reply