ভাগীরথী বক্ষে বিঘের পর বিঘে সন্তানসম চাষের জমি চলে গেলেও ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায় না আক্ষেপ চাষীদের

Social

মলয় দে নদীয়া :-ভাগীরথী নদীর জল শুকানো শুরু হতেই আবারো নতুন করে ভাঙ্গন নদীয়ার শান্তিপুর ব্লকের টেংরিডাঙ্গা এবং নবদ্বীপ ব্লকের বাহিরচড়া এলাকায়। গত দুদিনে প্রায় পাঁচ বিঘা জমি ভাগীরথী নদীর গর্ভে তলিয়ে গেছে বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর।সকাল থেকেই চাষিরা তাদের চাষের জমি বাঁচাতে কি করবেন সেই চিন্তায় ঘুম উড়িয়েছেন। ভাগীরথি তীরবর্তী টেংরিডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন,তাদের একাধিক চাষের জমি ইতিমধ্যে নদীবক্ষে চলে গেছে। গত দুদিনে প্রায় পাঁচবিঘে মতো মুলো টমেটো কাঁচালঙ্কা শাঁক আলু লাগানো চাষের জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। কেউ চাষ করেছিলেন ফুলকপি, কেউ টমেটো কিংবা অন্যান্য শাকসবজি। দীর্ঘ ৩ দিনে যে পরিমাণ ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে তাতে করে তারা যথেষ্টই চিন্তিত। এরকম ভাঙ্গন হতে থাকলে এর পরবর্তীতে এলাকার গ্রামে ভাগীরথীর জল প্রবেশ করবে তাতে করে ভিটেমাটি ছাড়া হতে হবেপ্রায় ৩০ হাজার মানুষের।

এদিন চাষিরা অভিযোগ করেন একাধিকবার রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারকে বলেও কোনরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এই গঙ্গা ভাঙ্গন প্রতিরোধ করতে রাজ্য সরকার কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ দেন,কিংবা অন্যান্য ক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। সরকারের তরফে তবে নদী ভাঙ্গনে চাষের জমি চলে গেলে কোনরকম ক্ষতিপূরণের কথা তো দূরে থাক তাদের হাতে দুটো পয়সা সাহায্য করে না।সরকার।তাই তাদের দাবি অবিলম্বে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার দুজনেই তৎপরতার সঙ্গে এই নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ করুক।

তবে এ বিষয়ে শান্তিপুর বিধানসভার বিধায়ক ব্রজোকিশোর গোস্বামী জানান ইতিমধ্যে এই গঙ্গা ভাঙনের কাজ তিনি বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই তৎপরতার সঙ্গে করছেন। নতুন করে জল শুকানোয় আবারও ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। তবে অতি দ্রুত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে এই ভাঙ্গন কিভাবে রোধ করা যায় তার জন্য তিনি সচেষ্ট হবেন। তবে নদী বিষয়টি দেখাশোনা করেন সরাসরি কেন্দ্র সরকার ।

তবে এ বিষয়ে তৃণমূল বিধায়ককে কটাক্ষ করেছেন শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা বিজেপি নেতা চঞ্চল চক্রবর্তী তিনি জানান বর্তমান রাজ্য সরকার বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে না উপরন্ত যখন গঙ্গা ভাঙ্গন তৈরি হচ্ছে তখন কেন্দ্রীয় সরকারের কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বর্তমান শাসক দল।

তবে এ বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত মেম্বারের স্বামী জানান ইতিমধ্যে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে গঙ্গার পার বাঁধনের কাজ শুরু হওয়ার প্ল্যান স্যাংশন হয়েছে। তবে নতুন করে পার ভেঙেছে তাতে করে যথেষ্টই আতঙ্কিত যে রকম চাষী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সেরকমই এই পার বাঁধানোর কাজ শুরু হলে অনেকটাই সুবিধা হবে এবং চিন্তা মুক্ত হবে এলাকাবাসীরা। তবে তিনি আরো জানান বর্তমানে এই ভাগীরথী নদী পক্ষ দিয়ে একাধিক বড় বড় জাহাজ এবং লঞ্চ চলাচল করে। কিন্তু তাদের জানা নেই সেই সমস্ত লঞ্চ বা জাহাজ কোথায় যাচ্ছে এবং এই সমস্ত লঞ্চ এবং জাহাজ চলাচলের ফলেই নদী পার বেশি করে ভাঙতে শুরু করেছে ইদানিং কেন্দ্রীয় সরকারের বেশ কিছু লঞ্চ এবং জলযান এই ভাগীরথী দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করছে আর সেই স্রোতে আরো ভাঙছে। নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে দিতে ড্রেজিং হোক কিংবা পাড় বাঁধানো কেন্দ্রীয় সরকার এখনো পর্যন্ত এই গঙ্গা ভাঙন নিয়ে কোনরকম পদক্ষেপে নিলেন না তবে রাজ্য সরকার এবং শান্তিপুরের বিধায়ক ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় যতটুকু সাহায্য করা বা সাধারণ মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা সমস্তটাই করেছেন একটি বড়সড়ো প্রকল্প আগামীতে রূপায়িত হতে চলেছে ।তাই বিধায়ককে ধন্যবাদ জ্ঞাপনও করেছেন তিনি।

Leave a Reply