ছেলেকে সুদূর রাজস্থান থেকে খুঁজে পাড়ার ছেলেরা মৃন্ময়ী মায়ের সামনে চিন্ময়ী মায়ের কোলে তুলে দিলো

Social

মলয় দে নদীয়া:-সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে খোঁজ পেয়ে পাড়ার ছেলেরা বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় ৬ মাস আগে মানসিক ভারসাম্যহীন এক চল্লিশ বছরের ব্যক্তিকে সুদূর রাজস্থান থেকে শান্তিপুরের বাড়িতে ফেরত নিয়ে এল আজ। জানা যায় গত সাত ই ফেব্রুয়ারি থেকে বাড়ি থেকে নিখোঁজ ছিলো মানসিক ভারসাম্যহীন ৪০ বছর বয়সী সত্যজিৎ ডাকনাম মনা দাস শান্তিপুর সুত্রাগড়ের বাসিন্দা। পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনেরা দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরেও না মেলায় ২৭ এ ফেব্রুয়ারী নাগাদ শান্তিপুর থানা একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এরপর বেশ কয়েকজন সহৃদয় ব্যক্তিরা সোশ্যাল মাধ্যমে যুবকের নিখোঁজ সংবাদ নিয়ে একটি পোস্ট করেন। পুত্রের শোকে গত দু মাস আগে মৃত্যু হয় পিতার। এরপর গত ৮ জুন সোশ্যাল মাধ্যমের পোস্ট এর উপর ভিত্তি করেই তারা খবর পান ওই যুবক রাজস্থানের পালি শহরে আপনা ঘর নামে একটি আশ্রমে নিখোঁজ ওই যুবক রয়েছেন। জানা যায় নরেন্দ্রপুরের নীতিশ দাস বলে একটি যুবক যার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ওই আশ্রমের। যেহেতু মানসিক ভারসাম্য ওই যুবক রাজস্থানের ওই আশ্রমে গিয়ে বাংলায় কথা বলছিলেন সেই কারণে আশ্রমের কর্তৃপক্ষ নরেন্দ্রপুরের নীতিশ দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এবং খোঁজ নিতে বলেন ওই যুবকের পরিচয় ও ঠিকানার। এরপর ফোনের মাধ্যমে কথোপকথন হয় নিখোঁজ এই যুবকের সঙ্গে নরেন্দ্রপুরের নীতিশ দাসের। ফোনেই নিখোঁজ ওই যুবক তার নাম ঠিকানা সমস্ত তথ্য দেয় নীতিশ বাবুকে। এরপরে নিতিশ বাবু আরো একটি পোস্ট করেন সোশ্যাল মাধ্যমে ওই যুবকের বিস্তারিত তথ্য সমেত। তারপরেই ওই পোস্ট দেখে যুবকের পরিবার যোগাযোগ করে নীতিশ বাবুর সঙ্গে। যোগাযোগ হওয়ার পরে নিখোঁজ ও যুবকের পরিবার নীতিশ বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করে ফোন নম্বর আদান-প্রদান হয় ওই আশ্রমের সঙ্গে।

পরিবার সূত্র তা জানা যায় নিখোঁজওই যুবকের পরিবারের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত সংকট জনক। যুবকের দাদা একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করেন। এইরকম সংকটজনক অবস্থায় স্থানীয় সূত্রাগর স্পোর্টিং ক্লাব থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যুবকে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা ক্লাবের আর্থিক তহবিল থেকে বেশ কিছু সাহায্য করবেন। এছাড়াও তারা বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী শান্তিপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ এবং শান্তিপুর থানার ওসি সুব্রত মালাকারের কাছে আবেদন করেন কিছু আর্থিক সাহায্যের জন্য, তারা প্রত্যেকেই বেশ কিছু টাকা দিয়ে আর্থিক সাহায্য করেন বলে জানা গিয়েছে। এরপরে সম্মিলিত অর্থ দিয়ে ক্লাবের এক সদস্য তুহিন ইন্দ্র ও যুবকের দাদা রাজস্থানের পালি শহর থেকে নিয়ে আসে ওই যুবককে। এই শুভক্ষণে বিধায়ক চেয়ারম্যান সহ সকল শুভাকাঙ্ক্ষীরা উপস্থিত ছিলেন। পাড়ার ঠাকুর দালানে তৈরি হচ্ছে আসন্ন দুর্গা ঠাকুরের মৃন্ময়ী প্রতিমা তারই সামনে আজ চিন্ময়ী মায়ের কাছে হারানো সন্তানকে ফিরিয়ে দেওয়া র ফলে খুশি তাদের পরিবার।

এ বিষয়ে শান্তিপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সুব্রত ঘোষ জানান, মানবিকভাবে যদি পাড়া বারোয়ারি ক্লাবগুলি এভাবে এগিয়ে না আসে স্বাভাবিকভাবেই তাহলে এত সহজে ওই যুবককে ফিরিয়ে আনা সম্ভব ছিল না। আজ তাকে পরিবার ফিরে পেয়ে খুবই খুশি। ভবিষ্যতে ওই যুবকের চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে বলা হয়েছে তাতে আমি আমার যতটুকু সম্ভব সাহায্য করবো।
বিধায়ক বলেন প্রথমে খবর পাই ওই এলাকার দলীয় কর্মীদের কাছ থেকে কিন্তু বিধায়ক হোক বা দলীয় কর্মী রাজনীতির থেকেও মানবিক হওয়া বেশি প্রয়োজন। তাই এ ধরনের কাজে পাশে থাকতে পেরে গর্বিত। এর আগেও এ ধরনের বেশ কয়েকটি সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। আগামীতেও শান্তিপুরের মানুষের যেকোনো সমস্যায় সাধ্য মতন পাশে থাকার চেষ্টা করব।

Leave a Reply