‘মাছ ছাড়া একদিন ‘ নদী বাঁচাতে অভিনব কর্মসূচি কৃষ্ণনগরে

Social

সোশ্যাল বার্তা: নদীয়া জেলার প্রাচীন নদী গুলির মধ্যে অন্যতম জলঙ্গী নদী। জলঙ্গী নদী নিয়ে রয়েছে অনেক অজানা ইতিহাস। ব্যবসায়িক দিক থেকে জলপথের মাধ্যম হিসেবে এক সময় জলঙ্গী নদীর গুরুত্ব ছিল অসীম। নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া জলঙ্গী নদীর অবস্থা বর্তমানে খুবই খারাপ একথা অস্বীকার করার উপায় নেই।

এই জলঙ্গী নদী বাঁচাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা তৈরি করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে চলেছে কৃষ্ণনগরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জলঙ্গী নদী সমাজ সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। শনিবার জলঙ্গী নদীর কালো জল, জেলার জলাশয়গুলির দুরবস্থা ও কৃষ্ণনগর শহরের মাছ বাজারগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন বিষয়ে জলঙ্গী নদী সমাজ ও নদিয়া পরিবেশ মঞ্চের সঙ্গে মাছ ব্যবসায়ীরা সংযুক্ত ভাবে ‘মাছ ছাড়া একদিন ‘ কর্মসূচি গ্রহণ করল। এই কর্মসূচিকে সামনে রেখে শনিবার কৃষ্ণনগর শহরের অধিকাংশ মাছ বিক্রেতাদের প্রতিবাদ স্বরূপ এক দিনের কর্মবিরতি পালন করতে দেখা গেল।

 

লোকসভা ভোটের আগে এমন আন্দোলন নজরবিহীন। এদিন কৃষ্ণনগর শহরের বিভিন্ন এলাকার মধ্যে গোয়াড়ি বাজার খুচরো মাছ ব্যবসায়ীরা, বড় বাজার মাছের আড়ত, রথতলা নতুন বাজার,আমিনবাজার, শক্তিনগর পাঁচ মাথা মোড় বাজার এবং বেলডাঙা বাজার বন্ধ থাকতে দেখা যায়।

শহরের মধ্যে অন্যতম পাত্রবাজারের মাছ ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকেই সমর্থন জানিয়ে দোকান খোলেননি বলে জানা গেছে। সংগঠকদের পক্ষ থেকে জানানো হয় শহরের ঘূর্ণি বাজার, গোলদিঘীর পার্শ্ববর্তী বাজারের এলাকার সঙ্গে সময়াভাবে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

জলঙ্গী নদী সমাজ সংগঠনের পক্ষ থেকে ড.অমিতাভ সেনগুপ্ত জানান, যেহেতু এক দিনের আয় ত্যাগ করার বিষয় তাই আমরাও জোর দিচ্ছি না সেই ভাবে। আশাকরি নদীর আর্তি বৃহত্তর মঞ্চে পৌঁছাবে।

জলঙ্গী নদী সমাজের আরেক সদস্য তুহীন গুপ্ত বলেন, নদীর জন্য, মৎস্য ব্যবসায়ী, মৎস্যজীবীদের এমন ঐক্যবদ্ধ এবং সাহসী পদক্ষেপ আগে পশ্চিমবঙ্গে অন্তত কোথাও হয়েছে কিনা তার জানা নেই।

এই কর্মকাণ্ডে এখনো পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমর্থন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠন।

এই প্রসঙ্গে জলঙ্গে নদী সমাজের জর্জ গোমস জানান, “জলঙ্গী নদীর জন্য আজকের এই মাছ বাজার বন্ধ পালনের অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য সকল জলঙ্গী নদী সমাজের সভ্যবৃন্দ ও সমর্থক’দের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আমি আজ ভীষণ আনন্দিত এই জন্য যে অন্তত একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ আমরা আজ রাখতে পারলাম। আমার একান্ত ইচ্ছা, যে আমি, জলঙ্গী মায়ের কোলে উচ্ছল উদ্যাম হয়ে খেলে বড় হয়েছি, সাঁতার শিখেছি ও আজ প্রাণবন্ত হয়েছি সেই নদীটা আবার’ও উচ্ছল, উদ্যামরূপী তার প্রাণ ফিরে পাক আর আমি তা দেখে যেতে চাই। এছাড়া আমার আর কোন ইচ্ছা নাই”।

Leave a Reply