লয় দে নদীয়া:- নদীয়ার শান্তিপুর দ্বারিকানাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা গত ১২ই অক্টোবর মায়াপুরে জেলা স্তরে আন্তঃ বিদ্যালয় মহিলা ফুটবল খেলতে গিয়ে খেলার দ্বিতীয় অর্ধে খেলার মাঝে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে গোলকিপার ডলি ঘোষ। এমনকি তার হৃদস্পন্দন থেমে যায় কিছুক্ষণের জন্য, সাথে সাথে ওই ফুটবল দলের দুই ছাত্রী যমুনা সরদার এবং সুইটি বিশ্বাস সিপিআর পদ্ধতিতে দুহাতের আঙুলগুলি বিশেষভাবে অবস্থান রেখে বুকের মাঝখানে হাতের তালু দিয়ে ঘষতে থাকে যা চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী সিপিআর নামে পরিচিত। এরপর অস্বাভাবিক ভাবে কিছুটা শ্বাস প্রশ্বাস নিলেও, ওই ছাত্রীসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে শিক্ষক শিক্ষিকারা ধুবুলিয়া হাসপাতালের দিকে রওনা দেন। পথে অসুস্থ ওই ছাত্রী একবার হেঁচকি তুলে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বন্ধ করে ফেলে আবারো। একইভাবে তারা পুনরায় ওই একই পদ্ধতি অবলম্বন করে তবে শিক্ষক আব্দুর রশিদ মোল্লার সহযোগিতায় । তবে প্রাথমিকভাবে এতে কাজ না হওয়ায় ওই দুই ছাত্রী মুখে নিজেদের মুখের হাওয়া দিয়ে হৃদপিন্ড সচল করার চেষ্টা করে আপ্রাণ, কিছুক্ষণের মধ্যে আবারো মেলে স্বস্তি। এরপর ধুবুলিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে তারা। যদিও বিদ্যালয়ে কর্তৃপক্ষ ওই খেলা থেকে নিজেদের বিরতির কথা জানিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষকে।
আজ ওয়ার্ল্ড হার্ট রিস্টার্ট ডে উপলক্ষে বিদ্যালয়ে ওই দুই ছাত্রীকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করা করেন ভারপ্রাপ্ত টিআইসি অমৃত শিকদার। উপস্থিত ছিলেন গেম টিচার সহ বিভিন্ন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পরিচালন সমিতির সদস্যবৃন্দ। যদিও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন আজ সুইটি বিশ্বাস বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারিনি তাই তাকে পুরস্কৃত করা হবে আগামীকাল। এই দুই ছাত্রীর কৃতিত্বে গর্বিত সমগ্র বিদ্যালয়। পরিচালন সমিতি দাবি তুলেছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পাওয়ার জন্য আবেদন জানানোর ব্যবস্থা তারা করবেন।
প্রসঙ্গত
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সমর্থনে ইউরোপীয় রিস্টার্ট এ হার্ট ডে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং প্রতি বছর অক্টোবরের 16 তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। 2019 সালে, দ্বিতীয় বিশ্বব্যাপী সংস্করণের আয়োজন হয়েছিল। দুই হাতের আঙুলের এক বিশেষ অবস্থান সহ হাতের তালুর অংশ দিয়ে বুকের মাঝে ঘষে, স্তব্ধ হয়ে যাওয়া হৃদস্পন্দন আবারও চালু করার বিশেষ এই পদ্ধতি অত্যন্ত ফলপ্রসু যা বিজ্ঞানসম্মত এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের অত্যন্ত জনহিতকর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পোশাকি নাম সিপিআর।
সরকারি তরফেও সচেতনতা তৈরি করতে যাতে প্রত্যেকে সিপিআর শিখতে পারে এবং স্কুল ও পাবলিক লোকেশনে বিএলএস কোর্সের সুবিধা দিতে পারে এমন ব্যবস্থাও আছে।