মদন মাইতি, নন্দকুমার: সালটা ২০২০। উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ।তার পর করোনা আর লকডাউনের জাঁতাকলে ছাড়তে হয় পড়াশোনা। দু চোখে স্বপ্ন ছিলো পড়াশোনার সাথে সাথে অংকন শিল্পী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া। করোনার ফলে দীর্ঘ লকডাইনে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছিলো পরিবার। পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পড়াশোনা আর করা হয়নি। অংকনকেই পেশা হিসাবে নিয়ে কাজ শুরু করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমারের কোলসর এলাকার যুবক পঞ্চানন ভূঁইয়া।
তার তুলে টানে ফুটে উঠেছে ছোট থেকে বড় বিভিন্ন ধরনের দেব-দেবী,মনীষী, বিখ্যাত মানুষ ও প্রকৃতির জীবন কাহিনী। চাল,ঔষধ, বালির ছোট নুড়ির, ফেলে দেওয়া বোতলের ছিপি, নারকেলের মালা, সহ অন্যান্য জিনিসপত্র দিয়ে নানান ধরনে ছবি ফুটিয়ে তুলেছে পঞ্চানন। সারা বছর ধরে নিত্য নতুন কিছু করার চেস্টা করে। তবে দুর্গাপূজার সময় ব্যস্ত হয়ে ওঠে মন্ডপ সজ্জার কাজে। তার তৈরি মন্ডপ সজ্জা দার্জিলিং এর পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন মন্ডপে ফুটে উঠবে। রাত দিন এক করে তারই কাজ করে চলেছে পঞ্চানন।
পঞ্চানন জানায়, আমাদের জেলার শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যা ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে তুলির টানে নানান জিনিস বানিয়ে,মন্ডপ সজ্জা করে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁকে দেখেই অনুপ্রেরণা পেয়েছি। পরিবারের হাতে অর্থ তুলে দিতেই এই কাজ শুরু করা। আগামীদিনে আর্ট নিয়ে কিছু করার ইচ্ছে রয়েছে।
পঞ্চাননের ছোট থেকেই ছবি আঁকার নেশা ছিলো। স্থানীয় এক শিল্পীর কাছে ছবি আঁকার প্রশিক্ষণ নেয়। তার পর নিজে নিজেই ছবি আঁকার কাজ শুরু করে। বর্তমানে এলাকার ছেলে মেয়েদের ছবি আঁকার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি নিজের কাজ করে চলেছে পঞ্জানন।
মা রেবতী ভূঁইয়া জানান, ছেলে ভালো কাজ করলে মা বাবা সকলেই খুশি হয়। আমরাও হয়েছি। তবে তার কাজ এলাকার মানুষ, জেলার মানুষ কতটা গ্রহন করছে সেটাই দেখার। ও আগামীদিনে আরও এগিয়ে চলুক। এলাকার নাম সুনাম করুক এটাই চাইবো।