দৃষ্টিহীন মূক ও বধিরদের আলো পৃথিবী বিখ্যাত হেলেন কেলারের মৃত্যুবার্ষিকী পালন নদীয়ার কৃষ্ণনগর হেলেন কেলার স্মৃতি বিদ্যালয়ের

Social

মলয় দে নদীয়া :-১ লা পয়লা জুন। ১৯৬৮ সালের united state এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন , দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি এবং বাকশক্তিহীনা পৃথিবী বিখ্যাত সেই মহীয়ষী নারী হেলেন কেলার।

তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৮০ সালের ২৭ জুন।
ছ বছর বয়সে তিনি বিখ্যাত বিজ্ঞানী গ্রাহাম বেলের সাক্ষাৎ পান, বিশেষ এক শিক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে তাকে জ্ঞানের আলোয় পৌঁছে দেন তিনি। তার এই শিক্ষণ পদ্ধতি পৃথিবীর বিখ্যাত ব্রেইল , যা আজ দৃষ্টিহীনদের প্রধান এবং অদ্বিতীয় শিক্ষণ পদ্ধতি।
হেলেন কেলার , রবীন্দ্রনাথের রচনা শুনেছিলেন স্বয়ং তার ঠোঁট এবং কন্ঠে স্পর্শের মাধ্যমে। ল্যাটিন ফরাসি জার্মান ও গ্রিক ভাষায় তার দক্ষতা ছিলো প্রশংসনীয়।
বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধিত্ব নিয়ে মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। হেলেন কেলার (Helen Keller) প্রতিবন্ধী শিশুদের অধিকারের জন্য আজীবন লড়াই করেছেন। একই সাথে হেলেন কেলার (Helen Keller) ছিলেন একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক ও রাজনৈতিক কর্মী।

পরবর্তীতে সারা পৃথিবীব্যাপী দৃষ্টিহীন এবং মূকবধিরদের শিক্ষিত করে তুলতে তার অক্লান্ত পরিশ্রম আজ সার্থক।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন দৃষ্টিহীন বিদ্যালয়ের মধ্যে কৃষ্ণনগর হেলেন কেলার স্মৃতি বিদ্যালয় অন্যতম। ১৯৮০ সালে একুশে মার্চ মাত্র কয়েকজন বিশেষভাবে সক্ষমদের শুভাকাঙ্ক্ষী যুবক-যুবতি গড়ে তুলেছিলেন এই বিদ্যালয়। প্রথমদিকে দৃষ্টিহীনদের পড়াশোনা শেখানো হলেও ২০০৬ সাল থেকে মূক ও বধির সংক্রান্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিয়মিত অনুশীলনের ব্যবস্থা করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আবাসিক এবং নিয়মিত আসা-যাওয়া করে বর্তমানে প্রায় ৯৬ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে এই বিদ্যালয় ‌ ১২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং তিনজন শিক্ষা কর্মীর অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রায় প্রতিবছরেই মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকে সফলতা পায় এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তনীরা। নার্সারি থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত চলা এই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী এবার উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে। মাধ্যমিকেও সফল হয়েছে এক ছাত্র এবং এক ছাত্রী।
বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ স্বপন সরকার বলেন, ভবন নির্মাণ শিক্ষক শিক্ষিকাদের সামান্য কিছু সান্মানিক মাঝেমধ্যে সরকারি অনুদান মিললেও , শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহযোগিতাতে এগিয়ে চলেছে বিদ্যালয়। তবে বহু দূর দূরান্ত থেকে ছাত্রছাত্রীদের আসা-যাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা, অভাবী সংসারে সেই ব্যয়ভারের জন্য অনেকেই শিক্ষার আলোকে পৌঁছাতে পারেনা। সেই ব্যাপারে তিনি সকল শুভাকাঙ্ক্ষী মানুষজন এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন আজকের এই বিশেষ দিনে।
বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সম্পাদক সজল দেবনাথ জানান, সরকারি তরফে আরো বেশি আন্তরিক এবং দায়িত্বভার গ্রহণ করলে তবেই, সমস্ত প্রতিবন্ধকতা যুক্ত ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষার আলোয় আসবে। এ বিষয়ে প্রতিটা বিদ্যালয়ে বিশেষ এই শিক্ষণ পদ্ধতি চালু করা দরকার ।

Leave a Reply